পুজোর ছুটি কাটিয়ে স্কুল খুললেও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা ২ নম্বর ব্লকের নীলাগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলা নিয়ে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনী (SIR)-এর কাজ শুরু হওয়ায় স্কুলের স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বুথ লেভেল অফিসার (BLO) হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে স্কুলের পঠন-পাঠন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষকের অভাবে অনিশ্চয়তা
নীলাগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ৩ জন—২ জন স্থায়ী শিক্ষক এবং ১ জন পার্শ্বশিক্ষক। এই তিনজনের মধ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রমা কুণ্ডু দাস এবং আরেকজন স্থায়ী শিক্ষক বিএলও-এর দায়িত্ব পেয়েছেন।
অভিভাবকদের প্রশ্ন, ভোটার তালিকার কাজ শেষ না-হওয়া পর্যন্ত একজন মাত্র পার্শ্বশিক্ষক রাজকুমার বাগ কীভাবে একা হাতে স্কুলের সব দায়িত্ব পালন করবেন? পড়ুয়াদের পড়াশোনা, সেই সঙ্গে মিড ডে মিলের দায়িত্ব একা পালন করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব। আর কয়েক দিন পরই স্কুলে বাৎসরিক খেলা ও পরীক্ষা রয়েছে।
বিএলও-এর দায়িত্ব পাওয়া প্রধান শিক্ষিকা রমা কুণ্ডু দাস বলেন, “ভোটার তালিকায় কাজের জন্য আমাদের নাম এসেছে। এসআইআর-এর কাজ তো আগেই করতে হবে। জানি না কি হবে স্কুলের ভবিষ্যৎ। আমরাও চিন্তায় রয়েছি।”
পার্শ্বশিক্ষক রাজকুমার বাগও আতঙ্ক প্রকাশ করে বলেন, “একদিকে স্কুলের এতোগুলি পড়ুয়া, সেই সঙ্গে মিড ডে মিলের খাবারের ব্যবস্থা। সবদিকে একার পক্ষে লক্ষ্য রাখা সম্ভব নয়। আমি একা পুরো কাজ করে উঠতে পারবো না।”
প্রশাসনের আশ্বাস, অভিভাবকদের আবেদন
এই পরিস্থিতিতে চন্দ্রকোণা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও উৎপল পাইক আশ্বাস দিয়েছেন যে, স্কুলের পড়াশোনার যাতে কোনও ক্ষতি না-হয়, সেই বিষয়ে প্রশাসন নজর রাখছে।
বিডিও বলেন:
“শিক্ষকদের স্কুলের কাজ, একই সঙ্গে বিএলও-এর কাজও করতে হবে। সকাল থেকে স্কুল করার পর তাঁরা সকাল ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিএলও-এর কাজ করবেন। তাই সমস্যার কোনও অবকাশ নেই বলেই মনে করি।”
তবে অভিভাবকরা এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন। অভিভাবক সাবিত্রী সমাদ্দার ওপর মহলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, অন্তত একজন শিক্ষকের নাম যদি বিএলও-এর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায়, তবে স্কুলটি স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। বর্তমানে স্কুলে প্রায় ৪৬ থেকে ৫০ জন পড়ুয়া রয়েছে।