পরকীয়ার সম্পর্ক যখন চরম পরিণতির দিকে মোড় নেয়, তখন ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা। বেঙ্গালুরুর পূর্ণ প্রজ্ঞা লেআউটের একটি OYO হোটেল থেকে হরিণী (৩৩) নামে এক বিবাহিত দুই সন্তানের মায়ের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তার শরীরে ১৭টি ছুরির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনায় তার প্রেমিক যশসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, শুক্রবার রাতে এই খুনটি সংঘটিত হয়েছিল, যদিও দেহটি উদ্ধার হয় রবিবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত হরিণী দুই সন্তানের জননী। স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে তার একটি ভরা সংসার ছিল। প্রায় এক মাস আগে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী যশসের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। যশস ছিলেন স্মার্ট এবং বাকপটু, যার ফলে তাদের আলাপ দ্রুত প্রেমে রূপান্তরিত হতে বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় যখন হরিণীর পরিবার তাদের এই পরকীয়ার সম্পর্কের কথা জানতে পারে।
পরিবার সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় হরিণী বুঝতে পারেন যে এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই যশসকে এই সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কথা বোঝানোর উদ্দেশ্যেই তিনি তাকে নিয়ে OYO হোটেলে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রেমিক যশস সম্পর্ক ভেঙে দিতে রাজি ছিলেন না। প্রেমিকা সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইছে দেখে তিনি নিজের রাগ সামলাতে পারেননি। অভিযোগ উঠেছে, এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে যশস ছুরি দিয়ে হরিণীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত হরিণী এবং অভিযুক্ত যশস দুজনেই বেঙ্গালুরুর কেঙ্গেরির বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, যশস সম্ভবত আঁচ করেছিলেন যে সম্পর্কটি শেষ হতে চলেছে। তাই তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েই হোটেলে এসেছিলেন। হোটেল রুমে হরিণীর সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদের এক পর্যায়ে তিনি ছুরি বের করে তাকে কোপাতে শুরু করেন। দক্ষিণ বেঙ্গালুরু পুলিশের ডিসিপি লোকেশ বি জগলাসার এই বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, “রাগ ও ঈর্ষার বশেই তরুণীকে ছুরি মেরে খুন করে অভিযুক্ত।”
খুনের পর যশস দ্রুত হোটেল থেকে পালিয়ে যান। রবিবার সকালে রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে হোটেল কর্মীরা হরিণীর রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন। এরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং মৃতদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত যশসকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এই ঘটনাটি আবারও পরকীয়ার সম্পর্কের জটিলতা এবং তার মর্মান্তিক পরিণতির এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত স্থাপন করল, যা গোটা বেঙ্গালুরুতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।