বিদায় ‘থ্রি নট থ্রি’! কলকাতা পুলিশের হাতে আসছে ‘গেমচেঞ্জার’ AK-47 রাইফেল

বহু দশকের পুরোনো ‘থ্রি নট থ্রি’ (303) রাইফেলের যুগ শেষ হতে চলেছে কলকাতা পুলিশে। বাহিনীর আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে এবার নতুন ত্রিচি অ্যাসল্ট রাইফেল (TAR) পাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি তিরুচিরাপল্লী (OFT) নির্মিত এই অত্যাধুনিক রাইফেল আগামী বছরের শুরুতে দফায় দফায় শহরে পৌঁছবে বলে জানা গেছে।

কলকাতা পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনার জানান, নতুন রাইফেলের কনসাইনমেন্টগুলো পর্যায়ক্রমে আসবে এবং তার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠ পর্যায়ে এটি বিলি করা শুরু হবে।

কেন TAR একটি ‘গেমচেঞ্জার’? নতুন TAR রাইফেলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর উন্নত কার্যকারিতা এবং হালকা ওজন। যেখানে পুরোনো ‘থ্রি নট থ্রি’ রাইফেলের ওজন ছিল প্রায় ৫.৫ কেজি, সেখানে TAR কমপক্ষে ২ কেজি হালকা। এর ফলে টহলদারি বা দীর্ঘ গার্ড ডিউটির ক্ষেত্রে কর্মীদের সুবিধা হবে।

ফায়ারিং মোড: এটি সিঙ্গল-শট এবং বার্স্ট ফায়ার, দু’ধরনের মোডেই চালানো যায়।

পাল্লা: প্রায় ৫০০ মিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও এই রাইফেল নিখুঁতভাবে আঘাত করতে সক্ষম।

ডিজাইন: রাইফেলটির মডুলার ডিজাইন, ভাঁজযোগ্য বাট (Folding Butt) এবং কম ওজন এটিকে দ্রুত এবং কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য আদর্শ করে তোলে।

আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তা: কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই পুরোনো অস্ত্রগুলি সরিয়ে INSAS এবং SLR রাইফেল ব্যবহার শুরু করেছে। তবে TAR-এ রূপান্তরকে কর্মকর্তারা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলছেন। বিশেষ করে ২০০৮ সালের ২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলার পর দেশের পুলিশ বাহিনীর জন্য আধুনিক অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা নতুন করে সামনে আসে। পুলিশকর্তাদের মতে, সশস্ত্র অপরাধী বা জঙ্গি মোকাবিলা করতে হলে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র অপরিহার্য, যা কর্মীদের মনোবলও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।

অন্যান্য আপগ্রেড: বিএসএফ (BSF) ও সিআরপিএফ (CRPF)-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ছত্তিশগড়, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড ও মধ্যপ্রদেশ পুলিশ ইতোমধ্যেই TAR ব্যবহার করছে। রাইফেল সংগ্রহের পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশ ইশাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি থেকে প্রায় ২০০টি স্বয়ংক্রিয় 9mm 1A পিস্তলও কিনছে। এছাড়াও, মধ্যপ্রদেশের টেকানপুর টিয়ার স্মোক ইউনিট থেকে অ-প্রাণঘাতী গোলাবারুদ সংগ্রহের পরিকল্পনাও রয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy