একের পর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের (Rape) মতো ঘৃণ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গুজরাতের সুরাতের জেলা আদালত এক সবজি বিক্রেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (Life Imprisonment) নির্দেশ দিয়েছে। অভিযুক্তের যৌন লালসার শিকার হওয়া নাবালিকাদের মধ্যে একজন গর্ভবতীও হয়ে পড়েছিল। এই রায়ের মাধ্যমে আদালত সমাজে এক কড়া বার্তা দিল।
কীভাবে সামনে এলো ঘটনা?
জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সুরাতের বাসিন্দা ১৩ বছর বয়সী এক নাবালিকার পেটে ব্যথা শুরু হয় এবং সে বারবার বমিও করছিল। মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, প্রতিবেশী পেশায় সবজি বিক্রেতা আলমগিরি তাকে যৌন নির্যাতন করেছে। ওই নাবালিকা আরও জানায়, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে অভিযুক্ত প্রতিবেশী তার সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করে এবং তার অন্য দুই বন্ধুকেও অশ্লীল ভিডিয়ো দেখায়।
ঘটনার তথ্য পেয়ে সুরাত সিটি পুলিশ দ্রুত সবজি বিক্রেতা আলমগিরিকে গ্রেফতার করে। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, আলমগিরি আরও দুই নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।
আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণ ও সাজা
পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরি করে আদালতে পেশ করে। মামলাটি বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক বিনোদ ভি পারমারের এজলাসে পৌঁছলে সরকারি আইনজীবী মুঞ্জল ব্রহ্মভট্ট জোরাল সওয়াল করে অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
উভয় পক্ষের যুক্তি শোনার পর, জেলা আদালতের তৃতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ এবং বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক বিনোদ ভি পারমার আলমগিরিকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে সারাজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল অত্যন্ত কঠোর:
“অভিযুক্ত তার নিজের সন্তানের চেয়েও ছোট মেয়েদের ধর্ষণ করেছে। প্রতিবেশী হিসেবে তার কর্তব্য ছিল এই মেয়েদের রক্ষা করা। কিন্তু তাদের আগলে রাখার পরিবর্তে নাবালিকাদের সঙ্গে একাধিক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছে, যার ফলে তাদের মধ্যে একজন গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এটি একটি ঘৃণ্য অপরাধ। সভ্য সমাজে এই ধরনের আচরণ সহ্য করা যায় না।”
ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি আদালত ভুক্তভোগী নাবালিকাদের জন্য মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত গর্ভবতী নাবালিকাকে সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা এবং অন্য দুই নাবালিকাকে ৬ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।