দার্জিলিংয়েও লু বইছে? গরমের দাপটে নাজেহাল পর্যটকরা, গরমে ফাঁকা ম্যাল!

দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রার পারদ চড়ছে হু হু করে, আর সেই তাপদাহ থেকে বাঁচতে পাহাড়ের দিকে ছুটছেন পর্যটকরা। পর্যটন ব্যবসায়ীরা যখন দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় পর্যটকদের ভিড় বাড়ার খবর দিচ্ছেন, তখন আপনার মনেও যদি দার্জিলিংয়ে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা এসে থাকে, তবে সম্ভবত আপনি ভুল করছেন। কারণ, সমতলের মতোই দার্জিলিংয়ের বাসিন্দারাও এখন গরমে নাজেহাল।

বর্তমানে দার্জিলিংয়ে থাকা পর্যটকরা হোটেলে রীতিমতো ফ্যান, কুলার খুঁজছেন। কলকাতা থেকে দার্জিলিং ঘুরতে আসা এক পর্যটক হতাশা নিয়ে জানান, “বেশ কয়েকবার দার্জিলিং এসেছি। কিন্তু এবার যথেষ্ট গরম পড়েছে। দিন দিন গরম বাড়বে। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে হয়তো আগামী দিনে দার্জিলিংয়ে শীতও পড়বে না। গেঞ্জি এমনকি হয়তো খালি গায়েই ঘুরে বেড়াতে হবে!”

ম্যালের ফাঁকা চিত্র: হতাশ পর্যটন শিল্প
সাধারণত ছুটির দিন এবং এই সময়ে পর্যটকদের ভিড়ে গমগম করা দার্জিলিংয়ের ম্যাল রবিবার এবং সোমবার একপ্রকার ফাঁকা। যারা এসেছেন, গরম এবং তীব্র রোদের কারণে হোটেল থেকে বের হচ্ছেন না। যদিও সন্ধ্যা এবং সকালে অনেকে হোটেল থেকে বেরিয়ে দার্জিলিংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

যে উত্তরবঙ্গে মানুষ পাহাড়ের শীতল আবহাওয়া উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন, সেই উত্তরবঙ্গেও এখন গরমের হাত থেকে কারো রেহাই নেই। ফলস্বরূপ, পাহাড়ে ঘুরতে এসে অনেকে হোমস্টের ঘরে বসেই সময় কাটাচ্ছেন। আবার অনেকে বাইরে বেরিয়ে তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে ডাবের জল পান করছেন। এ প্রসঙ্গে এক পর্যটক বলেন, “তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থায়, ডাবের জলই একমাত্র ভরসা। এই জল খেলে শরীর ঠান্ডা হয় এবং গরম থেকেও স্বস্তি দেয়।”

পর্যটকদের মুখে হতাশার সুর, হোটেল মালিকরাও চিন্তিত
ঘুরতে এসে পর্যটকদের আশাহত হতে হচ্ছে। কোথায় ঠান্ডা আবহাওয়া, এ যে ঘুরতে এসে কালঘাম ছুটে গেল – এমনটাই শোনা যাচ্ছে তাঁদের মুখে। একটু স্বস্তির জন্য যারা দার্জিলিংয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, এই শৈল শহরের তাপমাত্রা এখন ২৩ থেকে ২৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। যার ফলে পর্যটকদের মধ্যে গভীর হতাশা। তাঁরা জানিয়েছেন, “এই সময় দার্জিলিংয়ের মনোরম আবহাওয়া উপভোগ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোথায় কী! রীতিমতো ফ্যান চলছে দার্জিলিংয়ে।” আবহাওয়াবিদরা মৌসুমী বায়ুর অসামঞ্জস্যতাকে এই অবস্থার কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন।

হোটেল মালিকেরাও হতাশ। ঠান্ডা না থাকায় অনেকে ফিরে যাচ্ছেন, বাতিল হচ্ছে একাধিক বুকিং। রাতের তাপমাত্রা নেমে গেলেও আগের মতো ঠান্ডা নেই দার্জিলিংয়ে। অনেক পর্যটককেই সোয়েটার ছাড়াই পাহাড়ে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। গোটা পাহাড়জুড়ে দার্জিলিংয়ের এই আবহাওয়ার কারণে এক অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy