তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিবাদ আবারও প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, দুই বছর আগে বিজেপি সাংসদ রাজীব প্রতাপ রুডি তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন, আর সেই সময় দলের কোনো সহকর্মী তাঁর পাশে দাঁড়াননি। এই অভিযোগ দলের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে।
হুমকির অভিযোগ ও দলের প্রতি ক্ষোভ
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে, ২০২৩ সালে যখন তিনি সাংসদ মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ‘ক্যাশ ফর কোয়েশ্চেন’ বিতর্কে, তখন বিজেপি সাংসদ রাজীব প্রতাপ রুডি তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কঠিন সময়ে তৃণমূলের কোনো সাংসদ তাঁর পাশে দাঁড়াননি। তিনি বলেন, “মহুয়াকে সমর্থন করার জন্য রাজীব প্রতাপ রুডি আমাকে চোখ রাঙিয়েছিলেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমাদের উপনেত্রী শতাব্দী রায়ও তখন নীরব ছিলেন।”
মহুয়ার মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি নেতা রমেশ বিধুড়ির মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে করা আপত্তিকর মন্তব্যেরও নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “একজন মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা কি বিজেপির সংস্কৃতি? এই ধরনের আচরণের জন্যই বিধুড়িকে ২০২৪ সালের নির্বাচনে টিকিট দেওয়া হয়নি।”
অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ইতিহাস
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের সহকর্মীদের বিরোধ এই প্রথম নয়। এর আগে কসবা ধর্ষণ মামলা নিয়ে তাঁর মন্তব্যকে ‘নারীবিদ্বেষী’ বলে সমালোচনা করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। সেই সময় দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করে দুই পক্ষকে শান্ত করতে হয়েছিল এবং দলের সাংসদদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বন্ধ করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এই বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন যে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে, তবে বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের লড়াই জারি থাকবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই ধরনের অভ্যন্তরীণ বিবাদ দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে নন্দীগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিজেপির শক্তি বৃদ্ধির কারণে তৃণমূলের এই দ্বন্দ্ব তাদের সাংগঠনিক শক্তিকে দুর্বল করে দিতে পারে।