ইজরায়েল-ইরান সংঘাত ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে, আর এরমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণের’ দাবিকে সোজাসুজি নাকচ করে দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খামেনেইয়ের এক্স হ্যান্ডলে করা একাধিক পোস্ট মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে, যেখানে ‘যুদ্ধ শুরু’র ঘোষণা এবং ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর জবাবের হুমকি স্পষ্ট।
খামেনেইয়ের ‘যুদ্ধ শুরু’র ইঙ্গিত: তরোয়াল হাতে দুর্গদ্বারে এক যোদ্ধা
ট্রাম্প যখন তেহরানের প্রতি চূড়ান্ত শর্ত ছুড়ে দিচ্ছেন, ঠিক তখনই আয়াতোল্লা খামেনেই তার এক্স হ্যান্ডলে ফার্সি ভাষায় এক পোস্ট করে কার্যত ‘যুদ্ধ শুরু’র ইঙ্গিত দেন। যদিও সেই যুদ্ধ কার বিরুদ্ধে, তা সরাসরি উল্লেখ করেননি, তবে পোস্টের সঙ্গে থাকা একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তরোয়াল হাতে এক যোদ্ধা দুর্গদ্বারের সামনে দাঁড়িয়ে, যার পিছনে অনুগামীরা এবং আকাশ থেকে উল্কাবৃষ্টি হচ্ছে। এই প্রতীকী ছবি এবং তার পরপরই ইজরায়েলকে নিশানা করে করা মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। খামেনেই তার পোস্টে লেখেন, “সন্ত্রাসবাদী ইহুদি শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর জবাব দিতে হবে। আমরা কোনো ইহুদিবাদীদের প্রতি দয়া দেখাব না।” এই মন্তব্য সরাসরি ইজরায়েলের প্রতি ইরানের চরম হুঁশিয়ারি।
মঙ্গলবারই ট্রাম্প ইরানকে ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণ’ করতে বলেছিলেন এবং তার ‘ধৈর্যচ্যুতি’ ঘটছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু খামেনেইয়ের আজকের পোস্টগুলো প্রমাণ করে যে, ইরান মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই হুঁশিয়ারিকে বিন্দুমাত্র পরোয়া করছে না।
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের দাবি, পাল্টা হামলা তেল আভিভ ও তেহরানে
এদিকে, সংঘাতের মাত্রা বাড়িয়ে ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) দাবি করেছে যে, তারা ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে ফতেহ-১ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে IRGC-র এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বুধবার ভোরে ইজরায়েলের দিকে এই অত্যাধুনিক ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে এবং এর ফলে তেল আভিভে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এই হামলার পাল্টা হিসেবে ইজরায়েলি বিমান বাহিনী দ্রুত ইরানের রাজধানীর কাছে হামলা চালায়। ইরানের গণমাধ্যমগুলো তেহরান এবং কারাজেতে বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এই পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে এক বড় যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে।
এই মুহূর্তের এই ঘটনা প্রবাহ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক মহল এখন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এই পরিস্থিতির পরবর্তী পদক্ষেপ।
