বড়দিন ও নতুন বছরের আবহে যখন উৎসবের আমেজে মেতেছে আপামর বাঙালি, ঠিক তখনই পুরুলিয়ার বেকারিগুলির আসল কঙ্কালসার চেহারা সামনে এল। উৎসবের মরসুমে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে পুরুলিয়া জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতর ও জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ইবি) একযোগে এক বিশাল অভিযান চালায়। রঘুনাথপুর মহকুমা সহ জেলার প্রায় ১৫টি বেকারিতে এই তল্লাশি চালানো হয়। আর সেখানেই উঠে এসেছে হাড়হিম করা তথ্য।
কেমন ছিল অন্দরমহলের চিত্র? অভিযান চলাকালীন আধিকারিকরা দেখেন, একাধিক বেকারিতে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেক প্রস্তুত করা হচ্ছে। নেই পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা, এমনকি ডাস্টবিনের গা ঘেঁষে বা নোংরা মেঝেতে কেক তৈরির সরঞ্জাম পড়ে থাকতে দেখা যায়। নিয়ম অনুযায়ী যে গুণমান এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কথা, তার তোয়াক্কাই করছে না অধিকাংশ বেকারি মালিক। এছাড়াও মেয়াদ উত্তীর্ণ উপাদান ব্যবহার এবং লাইসেন্স সংক্রান্ত ব্যাপক গরমিল ধরা পড়েছে এই অভিযানে।
কড়া পদক্ষেপ প্রশাসনের: জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় কোনো আপোস করতে রাজি নয় প্রশাসন। জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক শোভন দাস জানিয়েছেন, রঘুনাথপুর মহকুমার বেশ কয়েকটি বেকারিতে লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় নথিপত্রের অভাব ছিল। নির্ধারিত গুণমান বজায় না রাখায় বেশ কয়েকজন মালিকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্য়েই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তাঁদের শোকজ নোটিশ জারি করা হয়েছে।
উৎসবের মরসুমে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে খাদ্য সুরক্ষা দফতর। কোনো চটকদার মোড়ক দেখে নয়, বরং বিশ্বাসযোগ্য জায়গা থেকে কেক কেনার অনুরোধ করা হয়েছে। আধিকারিকরা সাফ জানিয়েছেন, মানুষের প্রাণ নিয়ে ছিনিমিনি খেললে কাউকেই রেয়াত করা হবে না এবং আগামী দিনেও এই ধরনের অতর্কিত হানা জারি থাকবে।