বিদেশের মাটিতে ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল। কানাডার টরন্টো শহরে বন্দুকবাজের অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারালেন ২০ বছরের ভারতীয় ডক্টরাল ছাত্র শিবাঙ্ক অবস্থি। ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো স্কারবরো ক্যাম্পাসের (UTSC) খুব কাছেই এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। মেধাবী এই গবেষক ছাত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে কড়া বার্তা দিয়েছে টরন্টোস্থিত ভারতের কনস্যুলেট জেনারেল।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার হাইল্যান্ড ক্রিক ট্রেল ও ওল্ড কিংস্টন রোড সংলগ্ন এক ব্যস্ত এলাকায় শিবাঙ্ককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি, ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরেই আতঙ্কে ক্যাম্পাস চত্বরে সাময়িক লকডাউন জারি করা হয়। চলতি বছরে টরন্টোয় এটি ৪১তম খুনের ঘটনা। অভিযুক্তরা এখনও পলাতক, যার ফলে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তীব্র নিরাপত্তাহীনতা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শিবাঙ্ক অবস্থি কেবল একজন মেধাবী গবেষকই ছিলেন না, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিয়ারলিডিং দলের এক অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রাণবন্ত সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কান্নার রোল ওঠে। তাঁর চিয়ারলিডিং দলের সতীর্থরা জানিয়েছেন, শিবাঙ্কের পজিটিভ এনার্জি প্রতিটি প্র্যাকটিস সেশনকে উজ্জীবিত করত। কিন্তু দিনের আলোয় এমন একটি সুরক্ষিত এলাকায় কীভাবে গুলি চলল, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা পরিকাঠামোকে কাঠগড়ায় তুলেছেন পড়ুয়ারা।
উদ্বেগের বিষয় হলো, শিবাঙ্ক একা নন; গত কয়েকদিনেই টরন্টোতে আরও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ৩০ বছর বয়সী হিমানশি খুরানাকে খুনের অভিযোগে বর্তমানে আবদুল গাফুরি নামে এক ব্যক্তির খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। কানাডার মাটিতে পরপর ভারতীয়দের ওপর এই প্রাণঘাতী হামলা ও অপরাধের ঘটনা ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্কের আবহে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ভারতীয় কনস্যুলেট নিহতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে এবং এই ঘৃণ্য অপরাধের দ্রুত বিচার দাবি করেছে।