আহমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটল। হংকং থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার AI 315 বিমানটি মাঝপথেই যান্ত্রিক ত্রুটির সন্দেহে হংকংয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনা বিমানযাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
পাইলটের তৎপরতা: হংকংয়ে জরুরি অবতরণ
সূত্র মারফত জানা গেছে, নির্ধারিত সময়েই ফ্লাইট AI 315 হংকং থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। তবে মাঝপথেই পাইলট বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির সন্দেহ করেন। স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল মেনেই তিনি বিমানটিকে দিল্লির অভিমুখে না নিয়ে গিয়ে জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন এবং দ্রুত হংকং বিমানবন্দরে ফিরিয়ে আনেন। যদিও বিমানটিতে ঠিক কী ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে, তা এখনও সরকারিভাবে জানানো হয়নি।
বিমান অবতরণের পরপরই যাত্রী ও ক্রু সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিমানের সম্পূর্ণ পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বিমানটি কখন পুনরায় দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য জানানো হয়নি, তবে যাত্রীরা দিল্লির উদ্দেশ্যে যাত্রা করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
আহমেদাবাদের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার রেশ কাটেনি
সম্প্রতি, আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওড়ার কয়েক মিনিট পরই ভেঙে পড়ে। সেই ঘটনায় বিমানটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল এবং প্রায় ২৭৯ জন নিহত হন, যার মধ্যে ২৪১ জন যাত্রী এবং পাঁচজন শিক্ষার্থী ছিলেন। বিমানটি ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। অলৌকিকভাবে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন ব্রিটিশ নাগরিক সেই দুর্ঘটনায় বেঁচে যান।
আহমেদাবাদের এই দুর্ঘটনায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন, এবং স্থানীয় আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতাল ও বিজে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এখনও অনেকের দেহ মেলেনি এবং ধ্বংসস্তূপ খোঁজার কাজ চলছে। গুজরাট প্রশাসন মৃতদেহ শনাক্তকরণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। যারা নিখোঁজ, বিমানের যাত্রী ছিলেন বা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ডিএনএ নমুনা চাওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীর দেহের ডিএনএ শনাক্ত করা হয়েছে। মৃতদেহের ডিএনএ শনাক্ত করার জন্য একাধিক দল একসঙ্গে কাজ করছে। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপ সরাতে আরও কিছুটা সময় লাগবে, ফলে এর নিচে কেউ চাপা পড়ে আছেন কি না, তা বলা যাচ্ছে না। ধ্বংসস্তূপ সম্পূর্ণ সরানো গেলে মৃত্যুর সঠিক সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যেতে পারে।
এই সাম্প্রতিক ঘটনা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের নিরাপত্তা এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, যা যাত্রীদের মনে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
