ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে সপ্তম দিনে পা রাখা সংঘাতের আবহে মধ্যপ্রাচ্যে আরও বৃহত্তর যুদ্ধের কালো মেঘ ঘনাচ্ছে। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক নির্দেশ জারি হয়নি, তবে এই খবর বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আমেরিকার চূড়ান্ত পদক্ষেপ নির্ভর করছে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ থেকে সরে আসে কিনা তার ওপর।
ব্লুমবার্গের এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, চলতি সপ্তাহান্তেই ইরানে হামলা চালানোর জন্য ট্রাম্প প্রশাসন পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এই খবর মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে।
এর আগে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই গত বুধবার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খামেনেইকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করার আহ্বান জানান এবং দাবি করেন যে তিনি জানেন খামেনেই কোথায় লুকিয়ে আছেন। অন্যদিকে, খামেনেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইরান কারও কাছে মাথা নত করবে না এবং আমেরিকার সেনাবাহিনীর যেকোনো হস্তক্ষেপের পরিণতি ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ হবে।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে প্রায় ৮০ মিনিট ধরে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। মনে করা হচ্ছে, এই বৈঠকেই ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে ইতোমধ্যে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প তেহরান খালি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন এবং জি-৭ বৈঠক থেকে একদিন আগেই দেশে ফিরে আসেন। সিবিএস নিউজ এবং অ্যাক্সিয়স-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্প ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলি ধ্বংস করতে ইজরায়েলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন। ইজরায়েলও বিশ্বাস করে যে, আগামী দিনে ইরানের পরমাণু ভান্ডার ধ্বংসের যুদ্ধে আমেরিকা তাদের পাশে দাঁড়াবে।
যদি আমেরিকা সত্যিই ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায়, তবে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও মারাত্মক রূপ নেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল গভীরভাবে এই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে, কারণ এই অঞ্চলের যেকোনো সামরিক পদক্ষেপের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতি ও ভূ-রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী হবে।
