ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিস্ফোরক দাবি করে আন্তর্জাতিক মহলে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন। সোমবার ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের তেল নোফ বিমানঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, ইসরায়েলের বিমানবাহিনী নাকি তেহরানের আকাশের “পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ” গ্রহণ করেছে। এই দাবি যদি সত্য হয়, তবে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এক নতুন এবং ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছাতে চলেছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেতানিয়াহু এদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এবং চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামিরের সঙ্গে তেল নোফ বিমানঘাঁটি পরিদর্শন করেন। সেখানে সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সময় তিনি এই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেন।

“তেহরান ত্যাগ করুন”: নেতানিয়াহুর সরাসরি হুঁশিয়ারি
নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যে দুটি মূল লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করেন: “আমরা পরমাণু ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি নির্মূল করার দুটি লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি।” এরপরই তিনি সরাসরি তেহরানের বাসিন্দাদের উদ্দেশে এক কঠোর বার্তা দেন: “তেহরান ত্যাগ করুন। আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তেহরানের আকাশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় ইসরায়েল এখন “সেইসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছে যা ইরানি শাসকগোষ্ঠীর।” এর বিপরীতে তিনি ইরানের শাসকগোষ্ঠীকে “আমাদের সাধারণ নাগরিক—শিশু ও নারীদের হত্যায় মেতে উঠেছে” বলে অভিযুক্ত করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল তেহরানের সাধারণ মানুষকে আগেভাগেই রাজধানী ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে, কারণ ইসরায়েলি বিমানবাহিনী রাজধানীর নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।

সৈন্যদের উদ্দেশে বিজয়ী বার্তা: “আমরা সফল হব!”
বিমানঘাঁটিতে সৈন্যদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেন, “আপনাদের ধন্যবাদ। সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় আমরা ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করব এবং সফল হব। আমাদের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এগিয়ে যাবো।”

উভয়পক্ষে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে
এদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইরানের হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে দুই ডজন নিহত এবং আরও অনেকেই আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

নেতানিয়াহুর এই দাবি এবং তার পরবর্তী হুঁশিয়ারি আঞ্চলিক উত্তেজনাকে চরমে নিয়ে যাবে বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মহল। তেহরানের আকাশের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েল কীভাবে দাবি করছে এবং এর ফলশ্রুতিতে ইরানের প্রতিক্রিয়া কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, বিবিসি।