“আমেরিকা ও চিনের সম্পর্ক এত ভালো কখনও ছিল না”! দক্ষিণ চীন সাগরে সতর্ক করার পরই উল্টো সুর মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব হেগসেথের

দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে একযোগে দুটি বিপরীতমুখী মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা বাড়ালেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ (Pete Hegseth)। রবিবার তিনি একদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে দক্ষিণ চীন সাগরে চিনের ক্রমবর্ধমান কার্যকলাপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আর্জি জানান, আর এর কিছুক্ষণ পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেন, “দুই দেশের মধ্যে এর আগে এত ভালো সম্পর্ক কখনও ছিল না।”

হেগসেথ ঘোষণা করেছেন যে, ওয়াশিংটন এবার বেইজিংয়ের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ স্থাপন করবে।

বৈঠকের বার্তা ও এক্স পোস্ট
শনিবার রাতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বৈঠকের ফাঁকে হেগসেথ চিনের অ্যাডমিরাল ডং জুন (Dong Jun)-এর সঙ্গে কথা বলেন। হেগসেথ জানান, তাঁরা একমত হয়েছেন যে, “দুই মহান ও শক্তিশালী দেশের জন্য শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখাই সবচেয়ে ভালো পথ।”

এর পরই হেগসেথ এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে লেখেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে তিনি মনে করছেন, “এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের সম্পর্ক এত ভালো কখনও ছিল না।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, সপ্তাহের শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়ায় চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক ‘যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে চিরস্থায়ী শান্তি ও সাফল্যের সুর গড়ে তুলেছে’।

দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে সতর্কতা
যদিও এর খানিক আগেই হেগসেথ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান নেশনস অ্যাসোসিয়েশন-এর বৈঠকে যোগ দিয়ে প্রতিপক্ষ দেশগুলিকে চিনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “দক্ষিণ চীন সাগরের সমস্যাগুলি শান্তিপূর্ণভাবে মিটিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, [চিন] নিজেদের বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে। আমরা শান্তি চাই। কিন্তু আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, চিন যেন আপনাদের বা অন্য কারও উপর আধিপত্য বিস্তার না করে।”

উল্লেখ্য, দক্ষিণ চীন সাগর এশিয়ার অন্যতম বিতর্কিত অঞ্চল, যেখানে ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম-সহ আসিয়ান সদস্য দেশগুলির সঙ্গে চিনের ঘন ঘন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।

বিশেষজ্ঞ মহলের মত
বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিবের এই বিপরীত বার্তাগুলি—একদিকে চিনের বিস্তার নিয়ে সতর্কতা এবং অন্যদিকে সমঝোতামূলক ভাষা—আসলে বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার একটি অংশ। তবে এই ধরনের বিপরীত মন্তব্য দু’দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা টানাপোড়েনে সম্পর্কের ভারসাম্যের চেষ্টাকে মন্থর করে দিতে পারে বলেও তাঁরা মনে করছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy