বীরভূমের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের দ্বন্দ্ব এবার নতুন মোড় নিতে চলেছে। সম্প্রতি একটি অডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে যে রাজনৈতিক ঝড় উঠেছে, তার মধ্যেই বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ অসুস্থ অনুব্রত মণ্ডলকে দেখতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি TV9 বাংলাকে নিজেই বলেছেন, “ফোন করে জানব কেমন আছেন তিনি। সময় বের করে সশরীরে দেখতে যাব।”
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া অডিও কাণ্ডের পেছনে কাজল শেখের হাত রয়েছে বলে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কম জলঘোলা হয়নি। এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের তিহাড় যাত্রার আগেও তাদের মধ্যে কাজিয়া নিয়ে জল্পনা শোনা গিয়েছিল। এমনকি, ফিরহাদ হাকিমের এককালের ‘বাঘ’ ঘরে ফিরলেও একই চিত্র দেখা যায়। কিছুদিন আগে নেতাজি ইন্ডোরের মেগা বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও অনুব্রতকে ‘সতর্ক’ করতে দেখা গিয়েছিল। তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, “কেষ্ট, কাউকে কিন্তু বাদ দেওয়া যাবে না। কাজলকেও কনফিডেন্সে নিতে হবে।”
সম্পর্কের নতুন দিগন্ত?
এতকিছুর পরেও কি পরিস্থিতির বড় বদল এসেছে? এই প্রশ্ন ঘুরলেও কাজল শেখ বলছেন, কোনোকালেই কেষ্টর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খারাপ ছিল না। তাঁর কথায়, “আজ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারবেন আমার সঙ্গে কেষ্টদার তুতু ম্যা ম্যা হয়েছে? দেখাতে পারবেন না। যখন দেখাতে পারছেন না তাহলে বিভিন্ন জায়গা থেকে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যে সব বার্তা আসছে সেগুলিকে আমি ভুল বলে মনে করি।”
কাজল শেখের আশ্বাস
শুধু তাই নয়, সময় বের করতে পারলেই তিনি সোজা গিয়ে অসুস্থ অনুব্রতকে দেখেও আসবেন। এদিন TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে স্পষ্টতই বললেন কাজল। প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “কেষ্টদাকে দেখতে যাব না তো কখনও বলিনি। অবশ্যই যাব। আমি তো গতকাল ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে গিয়েছিলাম। ওনার চোখে অপারেশন হয়েছে। এখনও একটু ব্যস্ত রয়েছি। ব্যস্ততা কেটে গেলেই দেখতে যাব কেষ্টদাকে। ফোনও করব। খোঁজ করব।”
কাজল শেখের এই মন্তব্য বীরভূমের রাজনীতিতে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি কি তাদের পুরনো সম্পর্কের বরফ গলাবে, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো রাজনৈতিক সমীকরণ রয়েছে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।