নির্বাচনের আবহে জন সুরজ পার্টির (Jan Suraaj Party) সমর্থক ও লালু প্রসাদ যাদবের (Lalu Prasad Yadav) এক সময়ের ঘনিষ্ঠ নেতা দুলালচন্দ যাদবের (Dulalchand Yadav) মৃত্যু এবার নতুন রহস্যের জন্ম দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে, বৃহস্পতিবার মোকামার ঘোসবাড়ি বাজার এলাকায় জন সুরজ এবং এনডিএ প্রার্থীর কনভয়ের সংঘর্ষে ও গোলাগুলিতে বুকে গুলি লেগে তাঁর মৃত্যু হয় বলে মনে করা হয়েছিল।
এই ঘটনায় জন সুরজের নেতারা সরাসরি এনডিএ প্রার্থী অনন্ত সিংকে দায়ী করেন। কিন্তু দুলালচন্দের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকদের চাঞ্চল্যকর দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক ধারণাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে।
বুকে নয়, গোড়ালিতে গুলি—মৃত্যুর কারণ কি অন্য কিছু?
ময়নাতদন্তকারী দলের চিকিৎসক ডঃ অজয় কুমার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, দুলালচন্দ যাদবের বুকে গুলির ক্ষত মেলেনি। বরং, তাঁর গোড়ালির কাছে একটি গুলির আঘাতের চিহ্ন দেখা গিয়েছে।
💉 চিকিৎসকের দাবি: ডঃ কুমার জানান, “গুলিটি গোড়ালি ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ওই সামান্য ক্ষতের জন্য মৃত্যু হওয়া সম্ভব নয়।” ময়নাতদন্তের আগে দুলালের দেহের এক্স-রে করা হয়েছিল। সেখানেও নিশ্চিত হওয়া যায় যে, গুলিটি গোড়ালির কাছে লেগে মাংস ভেদ করে বেরিয়ে যায়।
চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, দুলালচন্দের দেহে গুলির ক্ষত ছাড়াও একাধিক ছড়ে যাওয়ার মতো আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। অর্থাৎ, তিনি হয়তো কোনো সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয়েছিলেন, অথবা পড়ে গিয়েছেন।
রাজনীতিতে দাপট ছিল দুলালচন্দের
প্রয়াত দুলালচন্দ যাদবের সঙ্গে আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদবের ঘনিষ্ঠতা ছিল দীর্ঘদিনের। ১৯৯০-এর দশকে যখন লালু ক্ষমতায়, তখন মোকামা এলাকায় দুলালের যথেষ্ট দাপট ছিল। তিনি আরজেডি-র তৃণমূল স্তরের ক্যাডারদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
মৃত্যুর সময় তিনি জন সুরজ পার্টির প্রার্থী পীযূষ প্রিয়দর্শীর হয়ে প্রচার করছিলেন। তিনি এর আগেও মোকামা আসন থেকে ভোটে লড়েছেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তাঁর এই মৃত্যু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরেই হয়েছে।
ডঃ অজয় কুমারের নেতৃত্বাধীন ময়নাতদন্তকারী দল শীঘ্রই বিস্তারিত রিপোর্ট পুলিশের কাছে জমা দেবে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই রিপোর্ট দুলালচন্দের মৃত্যুরহস্যে নতুন মোড় আনবে এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে। পুলিশ বর্তমানে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালাচ্ছে।