শীতের শুরুতেই প্রকৃতির জোড়া ফলায় বিদ্ধ দেশের রাজধানী। একদিকে ঘন কুয়াশার দাপটে দৃশ্যমানতা তলানিতে, অন্যদিকে বিষাক্ত বাতাসে কার্যত নিশ্বাস নেওয়াই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার সকালেও দিল্লির আকাশ ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকায় বিপর্যস্ত জনজীবন। পরিস্থিতি বিচার করে বিমানযাত্রী ও গাড়ি চালকদের জন্য কড়া সতর্কবার্তা জারি করেছে প্রশাসন।
কুয়াশার দাপট: বিমান চলাচলে বিঘ্ন
শুক্রবার সকালে দিল্লি, নয়ডা এবং গাজিয়াবাদে দৃশ্যমানতা ১০০ মিটারের নীচে নেমে এসেছে। অনেক জায়গায় তা শূন্যের কাছাকাছি। এই অবস্থায় বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে দিল্লি বিমানবন্দরের তরফে একটি অ্যাডভাইজ়ারি প্রকাশ করা হয়েছে। কুয়াশার কারণে বিমান ওঠানামা পিছিয়ে যেতে পারে বলে যাত্রীদের আগেভাগে খবর নিতে বলা হয়েছে। মৌসম ভবন এই অঞ্চলগুলিতে হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert) জারি করেছে।
বিষাক্ত বাতাস: রেড জ়োনে দিল্লি
দূষণ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রাজধানীর। শুক্রবার সকালের আপডেট অনুযায়ী দিল্লির গড় বায়ু গুণমান সূচক (AQI) পৌঁছেছে ৩৮৭-তে, যা ‘অতি খারাপ’ বা Very Poor ক্যাটিগরিতে পড়ে। শহরের ৩৯টি মনিটরিং স্টেশনের মধ্যে ১৪টিতেই দূষণ ৪০০-র গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে।
এক নজরে রাজধানীর দূষণ চিত্র (AQI):
-
আনন্দ বিহার: ৪৩৭
-
দ্বারকা সেক্টর ৮: ৪২০
-
আইটিও (ITO): ৪০৯
-
ওয়াজিরপুর: ৪০৪
হাইওয়েতে দুর্ঘটনার আতঙ্ক ও গতিসীমা
ঘন কুয়াশার কারণে সম্প্রতি আগ্রা-লখনউ এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তরপ্রদেশ সরকার সকালের দিকে গাড়ির গতিবেগ বেঁধে দিয়েছে। নির্দিষ্ট গতির চেয়ে বেশি জোরে গাড়ি চালালেই মোটা টাকা জরিমানা গুনতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
সবচেয়ে ঠান্ডা দিন, রেহাই নেই রবিবার পর্যন্ত
মৌসম ভবন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ছিল এই মরশুমের শীতলতম দিন, যেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২.১ ডিগ্রি কমে ২০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী রবিবার পর্যন্ত পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতির সম্ভাবনা নেই। কুয়াশা ও দূষণ—এই জোড়া সংকটেই কাটবে উইকএন্ড।