“আমি হাদিকে মারিনি, ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি”—জামাতের দিকে আঙুল তুলে ওপার বাংলায় তোলপাড় অভিযুক্তর

ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে এক নতুন এবং নাটকীয় মোড় এল। এতদিন ধরে একাধিক বাংলাদেশি নেতা এবং একাংশের সোশ্যাল মিডিয়া দাবি করে আসছিল যে, হাদি খুনের মূল অভিযুক্ত ফয়জল করিম মাসুদ নাকি ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছে খোদ মাসুদ। সে স্পষ্ট জানিয়েছে, সে ভারতে নয়, বরং বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ পুলিশের তালিকায় এই ফয়জল করিম মাসুদই হলো হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন। ভিডিও বার্তায় মাসুদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছে, “আমি হাদিকে মারিনি। এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো যোগসূত্র নেই। স্রেফ নিজেকে রক্ষা করার জন্য আমি দুবাইতে চলে এসেছি।” মাসুদের দাবি অনুযায়ী, সে একজন আইটি ফার্মের মালিক এবং হাদির সঙ্গে তার ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। এমনকি হাদিকে সে ৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিয়েছিল বলেও দাবি করেছে। মাসুদের অভিযোগের তির এখন জামাত-ই-ইসলামীর দিকে। তার মতে, হাদি ‘জামাতের প্রোডাক্ট’ এবং এই খুনের পিছনে তাদেরই হাত থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দিনের আলোয় জনসমক্ষে বাইকে করে আসা দুই আততায়ী হাদিকে গুলি করে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসারত অবস্থায় হাদির মৃত্যুর পর থেকেই বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী প্রচার তুঙ্গে ওঠে। দাবি করা হচ্ছিল, অভিযুক্ত মাসুদ ও আলমগীর শেখ ১২ ডিসেম্বরের পর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছে। ভারত সরকার শুরু থেকেই এই দাবির তীব্র বিরোধিতা করে আসছিল এবং একে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছিল।

মাসুদের এই ভিডিও বার্তাটি সামনে আসার পর এখন চরম অস্বস্তিতে পড়েছে সেই সব মহল, যারা এই খুনের ঘটনার সঙ্গে ভারতের নাম জড়ানোর চেষ্টা করছিল। খোদ অভিযুক্ত যখন দুবাই থেকে বার্তা দিচ্ছে, তখন এটা স্পষ্ট যে ভারতের দিকে আঙুল তোলা ছিল একটি পরিকল্পিত সাজানো গল্প। বাংলাদেশ পুলিশও মাসুদের ভারতে পালানোর দাবি থেকে সরে এসেছে। হাদি হত্যাকাণ্ডে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যদের ক্ষোভ এবং আন্দোলনের মাঝে মাসুদের এই স্বীকারোক্তি এখন তদন্তের মোড় কোন দিকে ঘোরায়, সেটাই দেখার।

Related Posts

© 2026 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy