‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ’ হল একটি হজমের ব্যাধি। মুখ ও খাদ্যনালীর সংযোগস্থলকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ইসোফেগাস, আর যখন পাকস্থলীর খাদ্যবস্তু ইসোফেগাসে ফিরে আসে তখন তাকে বলে ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ’। চলতি ভাষায়, একে টক ঢেকুর, চোঁয়া ঢেকুর বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সও বলা হয়। কোনও ব্যক্তির যদি সপ্তাহে দু’বারের বেশি এই ধরনের অ্যাসিড রিফ্লাক্সের উপসর্গ দেখা যায়, তবে তিনি এই জিইআরডি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। যদিও এটি শুরুতে খুব একটা ক্ষতিকারক মনে নাও হতে পারে, তবু সঠিক চিকিৎসা না করা হলে এটি ভবিষ্যতে বেশ কয়েকটি দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা ডেকে আনতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন পাকস্থলীর খাদ্যবস্তু মুখগহ্বর এবং পাকস্থলীর সংযোগকারী খাদ্যনালীর মধ্য দিয়ে উল্টো দিকে প্রবাহিত হয়, তখন এই সমস্যা দেখা যায়। এর ফলে জ্বালার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এই অংশের পেশীর বলয়কে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘লোয়ার ইসোফেজিয়াল স্ফিঙ্কটার’ বা ‘এলইএস’ বলা হয়। এটি সাধারণত এমন ভাবে বন্ধ থাকে যে, এটি শুধুমাত্র খাদ্যবস্তু গলাধকরণ করার সময়েই শিথিল হয় এবং খুলে যায়। ফলে খাবার প্রবেশ করতে পারে খাদ্যনালীতে।
গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে এটি খাবার খাওয়ার সময় ছাড়া অন্যান্য সময়ও খুলে যায়। ফলে নিম্নস্থিত খাদ্যবস্তু ও পাকরসে উপস্থিত বিভিন্ন অ্যাসিড খাদ্যনালীর উপরের দিকে উঠে আসে।
ভারী খাবার খাওয়ার অব্যবহিত পরেই শুয়ে পড়লেও অনেক সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে অনেক সময়ে হাইটাল হার্নিয়ার কারণেও জিইআরডি হতে পারে। এই ব্যাধিতে পেটের একটি অংশ ডায়াফ্রামের একটি উন্মুক্ত অংশের মাধ্যমে বুকের উপরের দিকে উঠে আসে।
দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলতে থাকলে কোনওমতেই একে অবহেলা করা উচিত নয়। সপ্তাহে দু’বারের বেশি এই সমস্যা দেখা দিলে অনতিবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিজে নিজে ওষুধ কিনে খেলে, হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়।