শিশুদের কাশি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, শুধু ঠান্ডা লাগলেই যে কাশি হয় তা কিন্তু নয়। আরও বেশ কয়েকটি কারণে শিশুর কাশি হতে পারে। যেমন— অ্যাসিড রিফ্লাক্স, হাঁপানি (বিশেষত রাতে কাশির অবস্থার অবনতি হলে), সাইনাস বা অ্যালার্জি থেকেও কাশি হতে পারে। যদিও কাশির জন্য বাজারে বিভিন্ন ওষুধ পাওয়া যায়, তবে ঘরোয়া উপায়ে শিশুর কাশি সারানোর পদ্ধতিগুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন হওয়ায় তা অনেক বেশি নিরাপদ এবং কার্যকর। জেনে নিন শিশুর কাশি হলে কী করবেন।
শিশুর কাশি সারানোর ৫টি ঘরোয়া ও নিরাপদ উপায়:
১. গরম জলে গার্গল: গলা ব্যথায় আরাম শিশুর কাশি সারানোর অন্যতম সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায় হলো গরম জলে গার্গল করানো। এটি কাশি ও গলা ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে সাহায্য করে। এক গ্লাস হালকা গরম জলে সামান্য লবণ মিশিয়ে দিনে অন্তত ৩ বার গার্গল করা খুব উপকারী। তবে, শিশু যদি খুব ছোট হয় এবং গার্গল করতে না পারে, তবে এই পদ্ধতিটি কার্যকর হবে না।
২. আদা ও মধু: সর্দি-কাশির যম সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার এক দুর্দান্ত প্রাকৃতিক উপাদান হলো আদা। আদার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ গলা ব্যথা ও কাশি কমাতে সাহায্য করে। শিশুকে এক টুকরো আদার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। মধুর অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য সর্দি-কাশির সঙ্গে লড়াই করে। (উল্লেখ্য, এক বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের মধু দেবেন না।)
৩. গরম স্যুপ: আরামদায়ক উষ্ণতা কাশির সমস্যা হলে শিশুকে বারবার গরম স্যুপ খাওয়ান। চিকেন স্যুপ বা ভেজিটেবল স্যুপ – যে কোনো গরম স্যুপ শিশুর কাশি এবং গলা ব্যথা দুটোই কমাতে সাহায্য করবে। উষ্ণ তরল গলাকে সতেজ রাখে এবং কফ বের হতে সাহায্য করে।
৪. মিছরি: গলার খুশখুশেভাব কমায় মিছরি খাওয়ালে শিশুর গলার আর্দ্রতা বজায় থাকে। ফলে গলার ভেতরের খুশখুশেভাব কমে যায়, যা কাশির অন্যতম প্রধান কারণ। এটি গলাকে আরাম দেয় এবং শুষ্ক কাশি উপশমে সহায়ক।
৫. হলুদ দুধ: প্রাচীন প্রতিকার শিশুর কাশি সারাতে আপনি হলুদ দুধ ব্যবহার করতে পারেন। হলুদ তার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিসেপটিক গুণের জন্য পরিচিত। এক গ্লাস গরম দুধে আধা চা চামচ হলুদ মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ালে কাশি থেকে দারুণ স্বস্তি মিলবে।
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা:
- এক বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের মধু দেবেন না, কারণ এতে বটুলিজম হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
- যদি শিশুর কাশি দীর্ঘস্থায়ী হয়, শ্বাসকষ্ট বা তীব্র জ্বর থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো প্রাথমিক উপশম দিলেও, গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান অপরিহার্য।
এই সহজ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ঘরোয়া উপায়গুলো অবলম্বন করে আপনি আপনার শিশুর কাশির সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারবেন এবং তাকে সুস্থ রাখতে পারবেন।