এ কথা নতুন নয় যে, মহিলারা অনেক সময়ই তাদের মনের কথা সরাসরি প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করেন, বিশেষ করে তাদের প্রিয়জনের কাছে। তারা মনে মনে আশা করেন যে তাদের সঙ্গী না বলতেই তাদের মনের ভাব বুঝতে পারবেন। এই ‘বোঝা’ এবং ‘না বোঝা’র দ্বন্দ্বে অনেক সময় সম্পর্কের বাঁধন আলগা হয়ে যেতে পারে। তাই পুরুষদের একটু বেশি মনোযোগী হতে হবে। তাদের স্ত্রীদের মনের গভীরে কী চলছে তা অনুভব করার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
অবশ্য, কারোর মনের সব কথা সম্পূর্ণভাবে বোঝা সম্ভব নয়। তবে, অন্তত কোন পরিস্থিতিতে স্ত্রী কী করলে খুশি হবেন, সেই বিষয়ে একটু ধারণা রাখলে সম্পর্কের অনেক জটিলতা এড়ানো যায়। আসুন, জেনে নেওয়া যাক স্ত্রীরা মনে মনে তাদের স্বামীর কাছ থেকে কোন বিষয়গুলি আশা করেন:
ঘরের কাজে সাহায্য করা: সংসার তো দুজনেরই। যদি স্ত্রী গৃহিণী হন, তবে দিনের বেশিরভাগ সময় তাকে বাড়ির কাজকর্মেই ব্যস্ত থাকতে হয়। অন্যদিকে, স্বামী হয়তো সারাদিন বাইরে পরিশ্রম করে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরেন। এমন পরিস্থিতিতে স্ত্রী মুখ ফুটে ঘরের কাজের কথা বলতে দ্বিধা বোধ করতে পারেন। কিন্তু দিনের শেষে তিনিও ক্লান্ত হন এবং মনে মনে আপনার কাছ থেকে কিছুটা সাহায্য আশা করেন। তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে আপনি যদি কিছু কাজে হাত লাগান, তবে আপনাদের সম্পর্ক আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।
তার কথা শোনা: স্ত্রী যেহেতু আপনার জীবনসঙ্গী, তাই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার মতামত নেওয়া অপরিহার্য। শুধুমাত্র নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে সিদ্ধান্ত না নিয়ে, আপনার স্ত্রী কী চান তাও বিবেচনা করুন। তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। আপনার স্ত্রীও মনে মনে এটাই কামনা করেন। দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
তাকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া: বেশিরভাগ মানুষই ভ্রমণ ভালোবাসেন। বিশেষ করে আপনার স্ত্রী যদি বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই কাটান, তবে তার এই ইচ্ছা আরও প্রবল হতে পারে। তাই সুযোগ পেলেই তাকে নিয়ে ঘুরতে যান। তার কোথায় যেতে ভালো লাগে তা আগে জেনে নিন এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন।
তাকে সারপ্রাইজ দেওয়া: অপ্রত্যাশিত উপহার বা সারপ্রাইজ পেতে সকলেই ভালোবাসেন। তবে অনেক সময় ব্যস্ততার কারণে পুরুষরা বিশেষ দিনগুলির কথা মনে রাখতে পারেন না। অথচ আপনার স্ত্রী হয়তো সেই বিশেষ দিনগুলিতে মনে মনে অপেক্ষা করতে থাকেন কখন আপনি তাকে চমকে দেবেন। মনে রাখবেন, জীবনে কিছু অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত থাকা প্রয়োজন। তা না হলে সম্পর্ক একঘেয়ে হয়ে যেতে শুরু করে এবং নতুনত্বের অভাবে ভাঙনের দিকেও যেতে পারে।
তাকে প্রাধান্য দেওয়া: প্রত্যেক মানুষই তার প্রিয়জনের কাছে গুরুত্ব পেতে চান, প্রাধান্য পেতে চান। আপনার স্ত্রীও মনে মনে একই আশা রাখেন। তাই তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করুন। আপনার কথা, কাজ এবং আচরণে যেন তিনি অনুভব করতে পারেন যে আপনি তাকে মূল্য দিচ্ছেন। এতেই তিনি খুশি হবেন এবং আপনাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
পরিশেষে বলা যায়, মহিলাদের মনের কথা বোঝা হয়তো কঠিন, তবে একটু চেষ্টা এবং মনোযোগ দিলেই সম্পর্কের অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। তাই পুরুষদের উচিত তাদের স্ত্রীদের অনুভূতিগুলির প্রতি আরও সংবেদনশীল হওয়া এবং তাদের নীরব প্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট থাকা।