প্রতিদিন শেভ করার অভ্যাস? সাবধান! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপদ বাড়ছে আপনার ত্বকের!

মসৃণ, পরিষ্কার দাড়িবিহীন চেহারা অনেক পুরুষেরই পছন্দের। কেউ প্রয়োজনে, কেউবা শখ বা অভ্যাসের বশে প্রতিদিন শেভ করে থাকেন। কিন্তু ‘হেলথলাইন’ জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা যে মতামত দিয়েছেন, তা আমাদের এই নিত্যদিনের অভ্যাস নিয়ে নতুন করে ভাবাতে বাধ্য করবে। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই মনে করেন, প্রতিদিন দাড়ি কামানো ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়, বরং এটি ডেকে আনতে পারে নানা সমস্যা।

কেন প্রতিদিন শেভ করা ক্ষতিকর?

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন দাড়ি শেভ করলে ত্বকের লোমকূপের গোড়াগুলো উন্মুক্ত হয়ে যায়। এই উন্মুক্ত লোমকূপগুলো বিভিন্ন জীবাণুর জন্য আশ্রয়স্থল তৈরি করে, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। সাধারণত দাড়ি না কাটলে বা কম কাটলে লোমকূপগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসে এবং জীবাণুগুলোও মরে যায়। কিন্তু প্রতিদিনের শেভিং এই প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, লোমকূপ খোলা রেখে দেয় এবং ফলস্বরূপ সংক্রমণ বাড়তে থাকে।

প্রতিদিন দাড়ি কামানোর কুফল:

চিকিৎসকদের দাবি, ত্বকের সাধারণ সংক্রমণ, যেমন ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ নিয়মিত দাড়ি শেভ করা। এই সমস্যাগুলো যদি দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকে, তবে তা বড় ধরনের চর্মরোগে রূপান্তরিত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ‘রেজার বার্ন’ (razor burn) এবং ‘ইনগ্রোন হেয়ার’ (ingrown hair)-এর মতো সমস্যাও নিয়মিত শেভিংয়ের ফল। এই ইনগ্রোন হেয়ারগুলো ত্বকের নিচে থেকে বেড়ে ওঠে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা বেশ যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ কী?

বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন শেভ করার পরিবর্তে ১-২ দিন অন্তর দাড়ি শেভ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এই সময়টুকু লোমকূপগুলোকে বন্ধ হতে এবং ত্বককে সুস্থ হতে সাহায্য করবে। এছাড়াও, শেভিংয়ের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি:

শেভিংয়ের পূর্বপ্রস্তুতি: শেভ করার আগের রাতে ত্বকে অল্প ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে পারেন, যা ত্বককে নরম রাখবে।

সঠিক পণ্যের ব্যবহার: শেভ করার সময় ভালো মানের জেল বা শেভিং ক্রিম ভালোভাবে মাখিয়ে নিন। এতে রেজার সহজে ত্বকের উপর দিয়ে চলবে এবং ঘষা লাগার কারণে সংক্রমণের আশঙ্কা কিছুটা কমবে।

পরিষ্কার রেজার: সবসময় ধারালো এবং পরিষ্কার রেজার ব্যবহার করুন। পুরনো বা ভোঁতা রেজার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এই ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তনগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এখন থেকে মসৃণ চেহারার পাশাপাশি ত্বকের সুস্থতার দিকেও নজর দিন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy