যারা পরিপাটি থাকতে পছন্দ করেন, তারা সবসময় সুন্দর দেখানোর জন্য পোশাক ইস্ত্রি করেন। কারণ ইস্ত্রি ছাড়া পোশাক কখনোই আপনার সৌন্দর্য বাড়াবে না। তাই পোশাক সুন্দর করে পরিপাটি করে গুছিয়ে পরুন, তবেই পোশাক এবং আপনার সৌন্দর্য পরিপূর্ণতা পাবে।
যে পোশাকই পরুন না কেন, তা যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়। পোশাক পরিষ্কার করার পর তা সুন্দর করে ইস্ত্রি করুন। এতে পোশাকের নান্দনিকতা বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। এই ইস্ত্রি করার কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে। এসব নিয়ম মেনে চললে কাপড়ের মান দীর্ঘদিন অটুট থাকবে। নইলে কিছু ভুলের কারণে দ্রুতই আপনার পছন্দের পোশাকটি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই সঠিক নিয়ম মেনে পোশাক ইস্ত্রি করুন। নিয়মগুলো হলো:
ইস্ত্রি করার স্থান: পোশাক টেবিলে ইস্ত্রি করতে পারেন। টেবিল না থাকলে মেঝেতে কাঁথা বিছিয়ে তার উপর সুতি মোটা কাপড় বিছিয়ে ইস্ত্রি করুন। এতে সমানভাবে তাপ ছড়িয়ে পড়বে এবং কাপড় সুরক্ষিত থাকবে।
কাপড়ের ধরন ও তাপমাত্রা: কাপড় ইস্ত্রি করার আগে খেয়াল করুন সুতি, সিল্ক, জর্জেট, লিনেন – কোন ধরনের কাপড় ইস্ত্রি করছেন। কাপড়ের ধরন বুঝে ইস্ত্রির তাপমাত্রা নির্ধারণ করুন। সাধারণত ইস্ত্রির গায়েই কাপড়ের ধরন অনুযায়ী কত তাপমাত্রা প্রয়োজন, তা লেখা থাকে। সেটি খেয়াল করুন। ভুল তাপমাত্রা আপনার প্রিয় পোশাক পুড়িয়ে ফেলতে পারে বা নষ্ট করে দিতে পারে।
অ্যারারুট বা মাড় দেওয়া কাপড়: অ্যারারুট কিংবা মাড় দেওয়া কাপড় জল ছিটিয়ে ইস্ত্রি করুন। তা না হলে কাপড় পুড়ে অথবা ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জলের ফোঁটা কাপড়ের তন্তুকে নরম করে ইস্ত্রি করা সহজ করে তোলে।
মসৃণ ও চকচকে কাপড়: মসৃণ চকচকে সার্টিন বা ক্র্যাপজাতীয় কাপড় সব সময় আরেকটি হালকা ভেজা সুতি কাপড়ের ভাঁজের মধ্যে রেখে তারপর ইস্ত্রি করুন। এতে কাপড়ের উজ্জ্বলতা নষ্ট হবে না এবং পোড়ার ঝুঁকি কমবে।
প্রিন্টেড কাপড়: ব্লক, হ্যান্ডপেইন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্ট করা কাপড় উল্টো দিক থেকে ইস্ত্রি করুন। তাহলে কাপড়ের রঙ নষ্ট হবে না এবং প্রিন্টও অক্ষত থাকবে।
সুতি কাপড়: সুতি কাপড় খুব গরম ইস্ত্রি দিয়ে ইস্ত্রি করবেন না, এতে কাপড়ের রং জ্বলে যায়। সব সময় উল্টো দিকে আয়রন করুন এবং তুলে রাখার আগে আয়রন করার সময় যদি জল ব্যবহার করে থাকেন, তবে তা বাতাসে শুকিয়ে নিন। এতে কাপড়ে ফাঙ্গাস পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
শার্ট বা ব্লাউজ ইস্ত্রি: শার্ট বা ব্লাউজ ইস্ত্রি করার সময় প্রথমে কলার ও হাতা ইস্ত্রি করুন, তারপর বাকিটুকু ইস্ত্রি করুন। এতে পোশাকের গঠন ঠিক থাকবে এবং ইস্ত্রি করা সহজ হবে।
কুশন ও টেবিল ম্যাট: কুশন উল্টো করে ইস্ত্রি করুন। টেবিল ম্যাটে মনোগ্রাম থাকলে উল্টো দিক থেকে ইস্ত্রি করুন, এতে ডিজাইন সুরক্ষিত থাকবে।
পোশাকে পারফিউম: যাদের বডি স্প্রে বা পারফিউম সরাসরি গায়ে ব্যবহার করলে অ্যালার্জি কিংবা অন্যান্য সমস্যা হয়, তারা কাপড় আয়রন করার সময় কাপড়ের উপর একটু পারফিউম ছিটিয়ে নিয়ে আয়রন করুন। এতে পারফিউমের গন্ধ অনেকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে এবং গায়ে সরাসরি পারফিউম ব্যবহারের ঝামেলা থেকেও রক্ষা পাবেন।
ঠাণ্ডা করে গুছিয়ে রাখা: কাপড় ইস্ত্রি করা হলে ঘণ্টাখানেক কাপড় ঠাণ্ডা করে তারপর আলমারিতে রাখুন। এতে কাপড় ভালো থাকবে দীর্ঘদিন এবং ভাঁজ পড়বে না।