সন্তান ধারণে বাধা? পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে রইল জরুরি টিপস

দুটি মানুষের জীবনে একটি নতুন প্রাণের আগমন যেন বেঁচে থাকার অর্থ ও মাত্রাকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দেয়। তবে আধুনিক জীবনযাত্রা, দেরিতে বিবাহ, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ প্রায়শই সন্তানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সহ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ছোট-বড় গবেষণা জানাচ্ছে, বন্ধ্যাত্ব এখন আর কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, বরং এটি বিশ্বব্যাপী একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, নারী বা পুরুষ উভয়ের সন্তানহীনতার মূল কারণ হলো বর্তমানের জীবনধারা। খাদ্যাভ্যাসের জটিলতা এবং অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক চাপের প্রভাবে এই সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।

একসময় কুসংস্কার ও অজ্ঞতার কারণে বন্ধ্যাত্বের জন্য নারীদেরকেই বেশি দায়ভার বহন করতে হতো। কিন্তু আধুনিক গবেষণা ও বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, একা নারী নন, এই সমস্যার জন্য পুরুষও সমানভাবে দায়ী। ভারতের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ মার্থা হাজরার মতে, প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের কারণ হন পুরুষরা।

পুরুষদের সুস্থ ও সবল প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আসুন, সেগুলো জেনে নেওয়া যাক:

ওজন নিয়ন্ত্রণ:

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা এই একটি বিষয়কে প্রায়শই উপেক্ষা করি। খুব কম বা খুব বেশি ওজন, উভয়ই প্রজনন ক্ষমতার জন্য ক্ষতিকর। তাই উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন বজায় রাখা প্রথম থেকেই জরুরি। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েট করুন এবং নিয়মিত শরীরচর্চা শুরু করুন।

সুষম খাদ্যাভ্যাস:

সময়ে খাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুম – এই দুটি বিষয়কে যত অবহেলা করবেন, বাবা হওয়ার সম্ভাবনা ততই কমবে। বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধে সহায়ক কিছু খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন – আমন্ড, মৌসুমী ফল ও শাকসবজি এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার।

মৌসুমী ফলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করে, তেমনই দই ও দুধ জাতীয় খাবারের ভিটামিন ই-ও এই সমস্যা দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

নিয়মিত শরীরচর্চা:

ব্যায়াম কেবল ওজন কমাতেই সাহায্য করে না, এটি শরীরের পুরুষ হরমোনগুলির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়ক। তাই একজন ফিজিক্যাল ট্রেনারের সহায়তায় প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করুন। সবসময় জিমে যেতে হবে এমন নয়, বাড়িতেও হালকা শারীরিক কসরত করতে পারেন।

সঠিক চিকিৎসা:

কেবল বন্ধ্যাত্বের জন্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া নয়, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, হাইপারটেনশনের মতো লাইফস্টাইল ডিজিজ থাকলে তার উপযুক্ত চিকিৎসা করান এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ও নিয়ম মেনে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

এই সহজ পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে পুরুষরা তাদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং সন্তান ধারণের সম্ভাবনা উন্নত করতে পারেন। একটি সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখা কেবল প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, সামগ্রিক সুস্বাস্থ্যের জন্যও অপরিহার্য।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy