প্রতিটি দম্পতিই চান তাদের ঘর আলো করে আসুক একটি ছোট্ট শিশু। সন্তানের মুখ দেখার আকাঙ্ক্ষা সকলের মনেই থাকে। তবে শুধু চাইলেই তো আর সব সময় পাওয়া যায় না। একটি নতুন জীবনকে পৃথিবীতে আনা অনেক বড় দায়িত্ব। তাই বাবা-মা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়। তবে যারা অনেক ভাবনা-চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেন, তারা আর দেরি করতে চান না। আর তাই অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার চেষ্টা করার সময় অনেকেই অধৈর্য হয়ে পড়েন।
দীর্ঘ অপেক্ষা অনেক সময় মানসিক চাপ বাড়াতে শুরু করে। আর এর প্রভাব পড়ে শরীরের উপরেও। ফলে গর্ভবতী হতে আরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। তবে এই সময় অনেক দম্পতিই বুঝতে পারেন না যে, তারা অজান্তেই কিছু ভুল করে ফেলছেন। আর সেই কারণেই তাদের এই নতুন যাত্রা আরও পিছিয়ে যায়। কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে এই পথ আরও মসৃণ হতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই নিয়মগুলো কী:
গর্ভ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ বন্ধ:
যদি আগে নিয়মিত গর্ভনিরোধক ওষুধ খেয়ে থাকেন, তাহলে মনে রাখবেন সেই ওষুধ বন্ধ করার পরেও শরীরের স্বাভাবিক ঋতুচক্রে ফিরতে কিছুটা সময় লাগে। অন্তত তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতেই পারে। তাই আগে থেকে পরিকল্পনা করুন। যখন পরিবারে নতুন সদস্য আনার কথা ভাবছেন, তার বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই এই ধরনের ওষুধ বন্ধ করা প্রয়োজন।
কখন সম্ভাবনা বেশি?
মাসের কোন দিনগুলোতে মিলিত হলে আপনার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, তা বুঝতে হবে। সাধারণত ঋতুস্রাবের প্রথম দিন থেকে ১৩-১৪ দিন পর আপনার শরীর সবচেয়ে বেশি প্রস্তুত থাকে। তাই ঋতুস্রাবের ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে চেষ্টা করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে। শুক্রাণু শরীরে প্রবেশের পর পাঁচ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকে। কিন্তু ডিম্বাণু মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত জীবিত থাকে। তাই একেবারে ১২ থেকে ১৪ দিনের জন্য অপেক্ষা না করে তার কিছুদিন আগে থেকেই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করুন।
কীভাবে সঙ্গম করছেন?
কীভাবে আপনারা মিলিত হচ্ছেন, তারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যদি সঙ্গম নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালোবাসেন, তবে এই সময় সেটি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কোন বিশেষ ভঙ্গিতে মিলিত হলে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে, সেই বিষয়ে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
লুব্রিক্যান্ট নয়:
শারীরিক সম্পর্কের সুবিধার জন্য যদি কোনো রকম লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার করেন, তবে এই সময় তা ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ কিছু লুব্রিক্যান্ট শুক্রাণুর কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
ধূমপান করবেন না:
তামাক সেবন সন্তান ধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধূমপান বন্ধ করে দিন। এতে ভবিষ্যতে আপনার সুস্থ সন্তান ধারণে সুবিধা হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন:
স্থূলতা শরীরে নানা রকম জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শরীরচর্চার দিকে নজর দিন। অতিরিক্ত ওজন গর্ভপাতের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে আশা করা যায়, সন্তান ধারণের পথে আসা অনেক বাধা সহজেই অতিক্রম করা যেতে পারে এবং প্রতিটি দম্পতি খুব শীঘ্রই তাদের সন্তানের মুখ দেখতে পারবেন।