সকালে যে দুই ব্যায়াম ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে, জানালো চিকিৎসকরা

সকালে ব্যায়ামের অভ্যাস বিশেষ করে দ্রুত হাঁটা অথবা সাইকেল চালানো ক্যানসার থেকে দূরে রাখতে পারে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে নতুন একটি গবেষণায়।

বিজ্ঞানীরা জানান, দিনের শুরু নিয়মিত ব্যায়াম করা বডি ক্লক বা দেহ ঘড়ি উন্নত করে- যা রোগ দমন করতে সহায়তা করে।

স্পেনে ২,৮০০ জন মানুষের ওপর পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে শারীরিকভাবে সক্রিয় ছিলেন, তাদের প্রোস্টেট বা ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কম ছিল। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, নাইট শিফটে কাজ করা ব্যক্তিদের তুলনায় তাড়াতাড়ি বিছানায় যাওয়া ব্যক্তিরা বেশি উপকৃত হয়।

গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের ডা. মানোলিস কোজভিনাস বলেন, ‘শারীরিক সক্রিয়তার সময়টি স্পষ্টতই যৌন হরমোন এবং মেলাটোনিনের ছন্দের উপরে প্রভাব ফেলে, পাশাপাশি খাদ্য বিপাকের উপরেও। এই ব্যাপারটিই আমাদের গবেষণার ফল ব্যাখ্যা করতে পারে।’

গবেষকদের মতে, রাতের বেলা শরীর মেলাটোনিন উত্পাদন করে। এই হরমোন ঘুম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং দেহ ঘড়ির ২৪ ঘণ্টা চক্র বা সার্কাডিয়ান রিদমের অনেকগুলো ফাংশনকে প্রভাবিত করে।

মেলাটোনিনও ক্যানসারের বিস্তারকে থামাতে পারে এবং এটি জানা যে, রাত জেগে কাজ করলে বা দেরীতে উঠলে শরীরে এই হরমোনের উৎপাদন ধীর হয়ে পড়ে।

ডা. কোজেভিনাস কোজভিনাস বলেন, ‘ক্যানসারের অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হলো সার্কাডিয়ান রিদমে ব্যাঘাত। এটি প্রতিষ্ঠিত যে, নিয়মিত ব্যায়াম আজীবনের জন্য ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। যখন ব্যায়াম সকালে করা হয়, তখন এই প্রতিরক্ষামূলক প্রভাবটি সবচেয়ে বেশি উপকারী হতে পারে।’

সার্কাডিয়ান রিদম ব্যাহত হওয়ার বিষয়ে বেশিরভাগ গবেষণা নাইট শিফটে কাজ করাকে দায়ী করে এসেছে। এটি কৃত্রিম আলোর সংস্পর্শ এবং গভীর রাতে স্ন্যাকসের খাওয়ার দরুন ক্যানসারে ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হয়।

নতুন গবেষণায় ক্যানসারের ঝুঁকি এবং ব্যায়ামের সময়ের মধ্যে যোগসূত্র শনাক্ত করা হয়েছে। এই গবেষণার ফল একটি পরীক্ষামূলক গবেষণাকে সমর্থন করে। ওই গবেষণায় বলা হয়েছিল, বিকেলে এবং সন্ধ্যায় ব্যায়াম করলে মেলাটোনিন হরমোন উত্পাদন ধীরগতির হয়ে পড়ে।

ডা. কোজেভিনাস বলেন, ‘ক্যানসার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যসহ এই হরমোনটি মূলত রাতে উত্পাদিত হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই গবেষণার ফল প্রমাণিত হলে ক্যানসার প্রতিরোধে বর্তমান শারীরিক সক্রিয়তার সুপারিশগুলোকে উন্নত করতে পারে। আপাতত যা স্পষ্ট তা হলো, প্রত্যেকেই খুব সহজেই তাদের ক্যানসার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারেন প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট পরিমিত ব্যায়ামের মাধ্যমে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy