আমাদের শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলসের প্রয়োজনীয়তা কতখানি, তা নিয়ে আলোচনা চলতেই থাকে। তবে শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হল আয়োডিন। মানুষের শরীরে আয়োডিনের অভাব দেখা দিলে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। শরীরে আয়োডিনের ঘাটতি হয়েছে, তা কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন, জেনে নিন। তাহলে সময় থাকতেই সতর্ক হতে পারবেন আপনি।
শরীরের নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখলে বুঝবেন যে আপনার শরীরে আয়োডিনের অভাব রয়েছে:
সারাক্ষণ ক্লান্তি ও ঝিমানো ভাব: আয়োডিনের অভাব থাকলে শরীরে সবসময় একটা ক্লান্তি, অবসন্নতা এবং ঝিমানো ভাব লেগে থাকে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরেও ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। এমনকি সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে যেতে পারেন।
মারাত্মক দুর্বলতা: শুধুমাত্র আয়োডিনের অভাবে আপনি মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। মনে হতে পারে যেন হাত-পা নাড়ানোরও ক্ষমতা নেই। শরীরে অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা দিলে সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া জরুরি।
ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কতা: আয়োডিনের অভাবে ত্বক মারাত্মকভাবে রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। এমনকি ত্বক ফেটেও যেতে পারে। এক্ষেত্রে সাধারণ ক্রিম বা তেল লাগিয়েও তেমন উপকার পাওয়া যায় না। তাই ত্বকে যদি অতিরিক্ত রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দেখা দেয়, তবে বুঝতে হবে শরীরে আয়োডিনের অভাব দেখা দিতে শুরু করেছে।
অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি: আয়োডিনের অভাবে আপনার শরীরের ওজন অস্বাভাবিক হারে বাড়তে পারে। তাই হঠাৎ করে ওজন বাড়তে শুরু করলে বিষয়টি খেয়াল রাখুন।
স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা ও মস্তিষ্কের নিষ্ক্রিয়তা: শরীরে আয়োডিনের পরিমাণ কম থাকলে মস্তিষ্কের সক্রিয়তা কমে যায়। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। সামান্য জিনিসও মনে রাখতে অসুবিধা হতে পারে এবং কাজে মন বসতে চায় না। এই লক্ষণগুলি একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়।
ঘাড়ের অংশে ফোলা ও যন্ত্রণা: আয়োডিনের অভাব শরীরে থাকলে ঘাড়ের অংশ ফুলে গিয়ে মারাত্মক যন্ত্রণা হতে পারে। যদি আপনার ঘাড় ও কাঁধে খুব যন্ত্রণা হয় এবং ঘাড়ের মাঝের অংশ ফুলে শক্ত হয়ে যায়, তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ঘনঘন অসুস্থ হওয়া: আয়োডিনের ঘাটতি ঘনঘন আপনার শরীর খারাপের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে খুব সহজেই সর্দি লাগতে পারে এবং তা বেশ ভোগাতে পারে। অল্পতেই যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, ঠান্ডা লেগে হাঁচি-কাশি হতে থাকে, তাহলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
চুল ঝরে যাওয়া: আয়োডিনের অভাব থাকলে মারাত্মক হারে চুল ঝরতে পারে। তাই সাবধান থাকুন। হঠাৎ করে যদি দেখেন প্রচুর চুল পড়া শুরু হয়েছে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
শরীরে এই লক্ষণগুলি দেখা গেলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যাগুলি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।