রান্নাঘরে কী কী থাকলে নতুন রাঁধুনির কাজকর্ম সহজ হবে? মেনে চললে সুবিধে হবে

রান্নার দায়িত্ব অন্য কারও উপর না ছেড়ে যদি নিজেই হেঁশেলের দিকটা সামলান, তা হলে বেশ কয়েকটা সুবিধে হবে৷ প্রথমত দেখবেন খরচপত্র কমে যাচ্ছে, জিনিসের অপচয় হচ্ছে না৷ যাঁরা প্রথমবার বাড়ির বাইরে একা থাকছেন, তাঁরা বাইরের খাওয়া বন্ধ করলেই বুঝতে পারবেন যে শরীর ভালো থাকছে, ওজন কমানোটাও সহজ হচ্ছে৷

এবার প্রশ্ন, রান্নাঘরে কী কী থাকলে নতুন রাঁধুনির কাজকর্ম করাটা সহজ হবে? শেফ ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী পীযূষ মেননের শরণাপন্ন হয়েছিলাম আমরা এ প্রশ্ন নিয়ে এবং তিনি যে টিপসগুলো দিলেন, তা মেনে চললে সকলেরই সুবিধে হবে৷

প্রথমেই আপনার যেটা দরকার, তা হচ্ছে ফ্রিজ৷ বাড়তি রান্না তুলে রাখা তো বটেই, তাজা শাকসবজি বা মাছ-মাংস স্টোর করে রাখার জন্যও ফ্রিজ হচ্ছে অপরিহার্য৷ ফ্রিজে অবশ্যই কিছু ডিম রাখুন৷ কলা, আপেল, মুসাম্বি, আনারস, বেদানা, আতা এই মুহূর্তে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে – যে মরশুমের যা ফল সেটা ফ্রিজে অবশ্যই থাকা উচিত৷ তবে এমন পরিমাণে কিনুন যা চার-পাঁচদিনের মধ্যে খেয়ে শেষ করে ফেলা যাবে৷ রাখুন মরশুমি সবজি, কাঁচালঙ্কা, আদা-রসুন, জ্যাম, মাখন৷ হোল হুইট ব্রেডও রাখা যায়৷ আর আপনার পছন্দের প্রোটিন এবং দুধ তো রাখতেই হবে! সপ্তাহে অন্তত একবার ফ্রিজ পরিষ্কার করুন, ডি-ফ্রস্টও করতে হবে নিয়মিত৷ পরদিন যা যা রান্না করবেন বলে ঠিক করেছেন, সব কিছু ফ্রিজ়ার থেকে বের করে ফ্রিজের উপরের বা মাঝের তাকে রেখে দিন আগের রাতে, ডিফ্রস্ট হয়ে যাবে৷

যদি আপনি একার রান্না করেন তা হলে দু’ বার্নারওয়ালা স্টোভ কিনলেই হবে৷ কিন্তু পরিবারের সকলের রান্নার জন্য আদর্শ হচ্ছে চার বার্নারের স্টোভ৷ ইন্ডাকশনও খুব কাজের৷ এমন বাসন কিনুন যা ইন্ডাকশন, স্টোভ, মাইক্রোওয়েভ আভেন সর্বত্র ব্যবহার করা যায়৷ মাইক্রোওয়েভ কিন্তু কনভেকশন আভেনের মতো ব্যবহার করবেন না, তাতে তার আয়ুষ্কাল কমবে৷ একটা ওটিজি কিনলেও খুব সুবিধে হবে – পছন্দের মাছ-মাংস বা সবজি একটু ম্যারিনেট করে গ্রিল করে নিলেই দারুণ উপাদেয় পদ তৈরি হবে৷

হাতে একেবারে সময় না থাকলে রাঁধুন ওয়ান পট মিল, যার আদর্শ উদাহরণ হচ্ছে আমাদের খিচুড়ি! একই সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল সব পাবেন৷ ভিন্ন ভিন্ন মশলা বা সস সহযোগে রাঁধলে এক একদিন এক একরকম স্বাদের খাবার তৈরি হবে৷ হাতের কাছে খানিকটা ভাত আর সবজি-প্রোটিন থাকলেই নানা রকমের ফ্রায়েড রাইস রাঁধা সম্ভব৷ ভাতের বদলে ন্যুডল ব্যবহার করলেও নিত্যনতুন স্বাদের পদ পাবেন৷ বিভিন্নরকম স্যালাডও বানানো যায় বাড়িতেই৷ পারফেক্ট রুটি বানাতে খানিকটা প্র্যাকটিস লাগে, যতদিন না সেটা হচ্ছে ততদিন হোল হুইট পাউরুটি রাখতে পারেন৷ প্রিজ়ারভেটিভ মুক্ত তাজা পাউরুটি কেনার চেষ্টা করুন, আজকাল অনেক কনফেকশনারিতেই তেমনটা তৈরি করা হচ্ছে৷

একটা মিক্সার-গ্রাইন্ডার-ব্লেন্ডার কিনতেই হবে৷ মশলা বাটা তো বটেই, আরও অনেক কাজে আসবে৷ আদা, রসুন, জিরের মতো রোজের ব্যবহারের মশলা ছুটির দিনে বেটে এয়ারটাইট কন্টেনারে পুরে রাখতে পারেন, চার-পাঁচদিন স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করা যাবে৷ গরমমশলাও শুকনো তাওয়ায় ভেজে গুঁড়ো করে রাখতে পারেন৷ মনে রাখবেন, আচার, পাঁপড়, বড়ি বা গোটা মশলা বায়ু নিরোধক পাত্রে রাখলেও মাস ছয়েকের মধ্যেই তা ব্যবহার করে ফেলতে হবে, তার চেয়ে বেশি থাকবে না৷

ছুরির ধার কমে যাচ্ছে কিনা সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন৷ ভোঁতা ছুরিতে হাত বেশি কাটে৷ আর কখনওই ছুরি আপনার অন্য কাটলারির সঙ্গে রাখবেন না, তাতেও ধার কমে যায়৷

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy