দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার ফলে রূপচর্চার উপাদান ফুরিয়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। আর নিজেকে মলিন দেখালে মন খারাপ হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। ত্বক ও চুলের সামান্য যত্নে যেমন সতেজতা ফেরে, তেমনই মনও থাকে প্রফুল্ল। কিন্তু হাতের কাছে যদি প্রসাধনী না থাকে?
চিন্তা নেই! আপনার রান্নাঘরে থাকা মুগ ডালই হতে পারে এই সমস্যার দারুণ সমাধান। এই ডাল কেবল মুখরোচক রান্নার জন্যই নয়, বরং এটি ত্বক ও চুলের যত্নেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রাকৃতিক উপাদানের এই ব্যবহার আপনার ত্বক ও চুলকে রাখবে প্রাণবন্ত।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক, মুগ ডাল ব্যবহার করে কীভাবে ত্বক ও চুলের জরুরি যত্ন নেওয়া যায়:
১. শুষ্ক ত্বকের প্রাণ ফেরাতে মুগ ডালের ব্যবহার
যাঁদের ত্বক শুকনো এবং খসখসে, তাঁদের জন্য মুগ ডাল বাটা দারুণ উপকারী।
-
পদ্ধতি: একমুঠো মুগ ডাল কাঁচা দুধে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন।
-
পরের দিন সকালে ডাল ভালোভাবে মিহি করে বেটে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
-
মুখ পরিষ্কার করে এই পেস্ট সারা মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিন।
-
এরপর হালকা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
-
ফল: নিয়মিত এই টোটকা ব্যবহারে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক হবে মসৃণ।
২. ব্রণের সমস্যা সমাধানে মুগ ডালের ভূমিকা
ব্রণের সমস্যা সমাধানেও মুগ ডাল বাটা অত্যন্ত কার্যকরী।
-
পদ্ধতি: সারা রাত মুগ ডাল জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে মিহি করে বেটে নিন।
-
এই পেস্টের সঙ্গে আধ চামচ ঘি মেশাতে পারেন (ঐচ্ছিক)।
-
মিশ্রণটি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন এবং ১০ মিনিট রেখে দিন।
-
শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
-
ভালো ফল পেতে: সপ্তাহে তিন দিন এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
৩. ত্বকের অবাঞ্ছিত কালো ছোপ দূর করার জাদু
ত্বকের অবাঞ্ছিত কালো ছোপ বা ট্যান দূর করতেও মুগ ডালের জুড়ি মেলা ভার।
-
পদ্ধতি: একমুঠো মুগ ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে বেটে নিন।
-
এর সঙ্গে সামান্য ঠান্ডা দই বা অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন।
-
মিশ্রণটি শুধুমাত্র কালো দাগের উপর লাগান।
-
৫ থেকে ১০ মিনিট পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
-
ফল: এটি আপনার ত্বককে পরিষ্কার করবে এবং ত্বক হবে আরও নরম ও মসৃণ।
৪. অতিরিক্ত চুল পড়া কমাতে মুগ ডালের হেয়ারপ্যাক
চুলের যত্নেও মুগ ডাল অত্যন্ত উপকারী। যাঁদের অতিরিক্ত চুল পড়ছে, তাঁরা প্যাক হিসেবে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
-
পদ্ধতি: কিছুটা মুগ ডাল জলে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। তারপর ডালটি বেটে নিন।
-
বাটা ডালের মধ্যে একটি ডিমের কুসুম মেশান।
-
কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এবং সামান্য দই মিশিয়ে একটি মসৃণ প্যাক তৈরি করুন।
-
এই প্যাক চুলে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ভালো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
-
গুরুত্বপূর্ণ: সপ্তাহে দু’বার এই হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করলে চুল পড়া কমবে এবং চুলের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
সুতরাং, রূপচর্চার সামগ্রী ফুরিয়ে গেলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আপনার রান্নাঘরের এই সাধারণ উপাদানটিই হতে পারে আপনার ত্বক ও চুলের যত্নের সেরা বন্ধু। ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারে ত্বক ও চুল থাকবে সতেজ ও প্রাণবন্ত।