প্রাপ্তবয়স্ক হলেই পরিবার ও আত্মীয়দের কাছে বিয়ের চাপ একটি সাধারণ বিষয়। এমনকি যারা বিয়েতে খুব একটা আগ্রহী নন, তাদেরও পরিবারের সদস্যরা বিয়ের ইতিবাচক দিকগুলো বোঝানোর চেষ্টা করেন। চারপাশে সুখী দম্পতিদের উদাহরণ টেনে তারা বোঝাতে চান যে, বিয়ে মানেই কেবল দাম্পত্য কলহ বা বিচ্ছেদ নয়। বিবাহিত জীবনে নানা ঘটনা ঘটতেই পারে, তবে আপনার ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটবে, এমনটা বিয়ের আগে থেকেই ভাবা উচিত নয়। বরং, বিয়ে করলে আপনি কীভাবে লাভবান হবেন, তা জেনে নেওয়া যাক।
আজীবন সঙ্গী ও মানসিক অবলম্বন
বৈবাহিক বন্ধনে জড়ালে আপনি একজন আজীবন সঙ্গী পাবেন। একা থাকার চেয়ে একজন সঙ্গী থাকলে তার সঙ্গে জীবনের বিভিন্ন সমস্যা, আবেগ, অনুভূতি, চিন্তাভাবনা ও মতামত ভাগ করে নেওয়া যায়। শুধু তাই নয়, আপনার জয় উদযাপন করার জন্য, কঠিন পরিস্থিতিতে সাহায্য করার জন্য এবং জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতি সামাল দিতেও একজন বিশ্বস্ত সঙ্গীর প্রয়োজন হয়।
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদারিত্ব
বিয়ের মাধ্যমে আপনি একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদার পাবেন। প্রেমের সম্পর্কে অনেক সময় প্রতিশ্রুতির অভাব দেখা গেলেও, বিয়েতে সেই প্রতিশ্রুতি থাকে। এমন সঙ্গীর উপর আপনি আস্থা রাখতে পারবেন এবং নিশ্চিত থাকতে পারবেন যে তিনি কখনো আপনার বিশ্বাস ভঙ্গ করছেন না। এই বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে আপনিও সঙ্গীর প্রতি অনুগত থাকার চেষ্টা করুন।
আরও শিখতে পারা
বাকি জীবনটুকু যার সঙ্গে কাটানোর প্রতিশ্রুতি আপনি করছেন, তার সঙ্গে বিয়ের পর এক ছাদের তলায় বসবাস করতে গিয়ে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন। বিয়ের মাধ্যমে দম্পতিরা একে অপরকে ভালো মানুষ হতে সাহায্য করেন। শুধু একে অন্যের দোষ না ধরে, বরং সঙ্গীর প্রতিভাও খুঁজে বের করেন। একে অপরের স্বপ্নকে সমর্থন করার সময় দুজনে মানিয়ে নিতে শেখেন বিবাহিতরা।
যত্নশীল সঙ্গী লাভ
আপনার সঙ্গী যদি যত্নশীল হন, তাহলে দেখবেন বিয়ের পর ঠিকই তার প্রেমে আপনি মজবেন। নারী-পুরুষ সবাই চায় তার সঙ্গী যেন যত্নশীল হয়। একজন যত্নশীল স্বামী/স্ত্রী পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের বিষয়। মনে রাখবেন, বিয়ে করলে আপনিও পেতে পারেন একজন সঙ্গী, যিনি আপনার প্রতি হবেন যত্নশীল।
অভিভাবকত্বের আনন্দ
বিয়ের মাধ্যমে আপনি অভিভাবকত্বও উপভোগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে সন্তানদের ভালো করে লালন-পালন করা খুবই জরুরি। একটি সন্তানকে আরও ভালোভাবে বড় করতে আপনাকে ও আপনার স্ত্রী উভয়কেই নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা
বিয়ের মাধ্যমে আপনি ব্যক্তিগত জীবনে নিরাপত্তা পেতে পারেন। বেশিরভাগ মানুষই প্রেমের সম্পর্কে থাকাকালীন সঙ্গী ছেড়ে চলে যেতে পারেন ভেবে ভয় পান, সেক্ষেত্রে বিয়ে করলে আর এই ভয় থাকবে না। আসলে ভালোবাসার সম্পর্কের শেষ পরিণতিই তো বিয়ে, এজন্য বিয়ের মাধ্যমে সবাই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা করেন। তাই বিয়ের পর আর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয় না।
উন্নত স্বাস্থ্য
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিতদের স্বাস্থ্য তুলনামূলকভাবে ভালো থাকে। বিয়ের মাধ্যমে যেসব স্বাস্থ্য উপকারিতা মেলে তা হলো:
দীর্ঘজীবী হওয়া যায়।
স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
হতাশার প্রবণতা কমে।
গুরুতর ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে, এমনকি ক্যানসার হলেও সারভাইভ বা বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
তবে শুধু বিবাহিত হলেই যে এসব স্বাস্থ্য উপকারিতা মিলবে তা কিন্তু নয়, বিবাহিত জীবনে আপনি সুখী কিনা তার উপর নির্ভর করবে আপনার সুস্বাস্থ্য। স্ট্রেসপূর্ণ ও অসুখী বিবাহিতরা আবার একজন অবিবাহিত ব্যক্তির চেয়ে খারাপ স্বাস্থ্যের অধিকারী হন। বিয়ের স্বাস্থ্য সুবিধাগুলোর বেশিরভাগই বিবাহিত নারীদের তুলনায় পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি স্পষ্ট।