পেটে ব্যথা কি শুধু গ্যাস্ট্রিক? হতে পারে নীরব ঘাতক অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের ইঙ্গিত! জানুন জরুরি লক্ষণগুলি

পেটে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। ভুল খাবার খাওয়া, হজমের গোলমাল বা গ্যাস্ট্রিকের কারণে এমনটা হয়েই থাকে। বেশিরভাগ মানুষই একে সাধারণ সমস্যা ভেবে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে অবহেলা করেন। কিন্তু, প্রায়শই পেটে ব্যথা হওয়া একটি গুরুতর রোগের ইঙ্গিতও হতে পারে—বিশেষত অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের মতো নীরব ঘাতকের লক্ষণ হিসেবেও এটি দেখা দিতে পারে।

অগ্ন্যাশয় ক্যানসার: এক লুকানো বিপদ

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের মধ্যে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, অন্যান্য ক্যানসারের তুলনায় এই ধরনের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং এর ভয়াবহতা বেশি। চিকিৎসকদের মতে, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার সহজে ধরা পড়ে না। ফলে দ্রুত এই রোগ নির্ণয় করা যায় না এবং যখন এটি ধরা পড়ে, ততক্ষণে ক্যানসার শরীরে অনেকটাই ছড়িয়ে যায়। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন এবং ধূমপানের অত্যধিক প্রবণতা এই ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে কারণ যাই হোক না কেন, দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার জন্য এই ক্যানসারের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকা জরুরি।

অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণসমূহ:

১. তীব্র পেটে যন্ত্রণা: অগ্ন্যাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই তীব্র পেটে ব্যথার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। এই যন্ত্রণা এই ক্যানসারের অন্যতম প্রধান উপসর্গ। কিছু খাওয়ার পর বা শুয়ে থাকা অবস্থায় এই যন্ত্রণা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। অনেকের ক্ষেত্রে এই ব্যথা পেট থেকে পিঠের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা।

২. জন্ডিস: ঘন ঘন জন্ডিস হওয়াও কিন্তু অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। বারবার ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত হওয়া, দীর্ঘস্থায়ী জ্বর এবং অনবরত ক্লান্তিবোধও এই ক্যানসারের অন্যান্য লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

৩. বদহজম: খাওয়া-দাওয়ায় একটু অনিয়ম হলে বদহজম হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার। তবে এই সমস্যা সাধারণত সাময়িক হয়। যদি দেখেন, ওষুধ খাওয়ার পরেও মাঝে মাঝেই এই সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, তাহলে তা অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়। বদহজমও কিন্তু অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ। এই প্রকার ক্যানসারের রোগীদের বদহজমের সঙ্গে সঙ্গে খাওয়ায় অরুচি এবং সারাক্ষণ বমি বমি ভাবের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

৪. মলের রঙে পরিবর্তন ও অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস: এছাড়া, যদি আপনার মলের রঙে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখেন অথবা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমতে থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। প্রাথমিক অবস্থায় এই ক্যানসার শনাক্ত হলে রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বহুলাংশে বেড়ে যায়।

পেটের ব্যথাকে শুধু গ্যাস্ট্রিক ভেবে অবহেলা না করে, উপরোক্ত লক্ষণগুলির বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে তা আপনাকে একটি গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy