ধুলা-ময়লা, দূষণ, অপরিচ্ছন্নতা এবং ঘামের কারণে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এরমধ্যে ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণের কারণে যে গোল গোল ছোপ পড়ে ও চুলকায়, তাকে সাধারণত দাদ বলা হয়। আমাদের সমাজে এটি খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। যেকোনো বয়সের যেকোনো মানুষ এতে আক্রান্ত হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা, আর্দ্র স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদি এই সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
এটি খুবই ছোঁয়াচে। মাথার ত্বক থেকে শুরু করে পিঠ, হাত, পা, কুঁচকি, বগল ও শরীরের নানা ভাঁজে প্রথমে লালচে গোল গোল বা ডিম্বাকৃতির ছোপ দেখা দেয়। এর ওপর লাল আবরণ থাকে ও ভীষণ চুলকায়। এত বেশি চুলকায় যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে।
আপনার ত্বকেও কি প্রায়ই দাদ হয়? তাহলে নিরাময়ের কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় জেনে নিন।
> যে জায়গায় দাদ হয়েছে সেই স্থান সবসময় পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। এতে চারিদিকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয় থাকেনা। দাদের সংক্রমণ রোধ করতে, সাবান জল দুর্দান্ত কার্যকর। প্রতিদিন আক্রান্ত স্থান জল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করুন। তারপর জায়গাটা আলতো হাতে মুছে নিন।
> অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে শক্তিশালী অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি দাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। প্রথমে একটি পরিষ্কার তুলার বল অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে ভিজিয়ে নিন। তারপর ওই বলটি দিয়ে সংক্রমিত জায়গায় আলতো হাতে ব্রাশ করুন। ভালো ফল পেতে এই প্রক্রিয়াটি দিনে তিনবার করা যেতে পারে।
> টি-ট্রি অয়েলে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ছত্রাকজনিত ত্বকের ইনফেকশনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। তাই প্রথমে একটি পরিষ্কার তুলার বলে কয়েক ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল নিয়ে সরাসরি সংক্রমিত স্থানে লাগিয়ে নিন। তবে আপনার যদি সংবেদনশীল ত্বক হয় তবে, টি-ট্রি অয়েল নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এই প্রক্রিয়াটি দিনে দুই থেকে তিনবার করা যেতেই পারে।
> নারকেল তেলে মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উভয় বৈশিষ্ট্যই আছে, যা দাদের সংক্রমণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। দাদ ছাড়াও এটি ক্যান্ডিডা এবং অন্যান্য ছত্রাক সংক্রমণের ক্ষেত্রেও কার্যকর। প্রথমে একটি পাত্রে নারকেল তেল নিয়ে হালকা গরম করে নিন। তারপর ওই হালকা গরম তেল সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন। এটি ত্বকে দ্রুত শোষিত হয়। অন্তত দিনে তিনবার এই প্রক্রিয়াটি করুন।
> হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। হলুদে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। তাছাড়া হলুদ কার্যকরী অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবেও কাজ করে। এটি সংক্রমণের বৃদ্ধিকে রোধ করতে অত্যন্ত সহায়ক। প্রথমে তাজা হলুদ বাটা কিংবা হলুদ গুঁড়া নিয়ে তাতে সামান্য জল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর সংক্রমিত স্থানে সরাসরি লাগিয়ে শুকিয়ে নিন।
> দাদের সংক্রমণ রোধ করতে অ্যালোভেরাও দুর্দান্ত কার্যকর। অ্যালোভেরাতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অ্যালোভেরা দাদের চুলকানি, অস্বস্তি এবং প্রদাহের লক্ষণগুলিকে প্রশমিত করতে সহায়তা করে। সংক্রমিত স্থানে সরাসরি অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে দিন। ভালো ফল পেতে দিনে তিনবার করুন এই কাজটি।