‘আলু’ দুই অক্ষরের এই ছোটো গোলগাল সবজির জনপ্রিয়তা রয়েছে সর্বএই। বিশেষ করে বাঙালীদের কাছে আলুর প্রতি প্রেম একটু অন্যরকমই। সবজির ঝুড়িতে হোক বা তরকারী, আলু না হলে চলে না আমজনতার। তবে ডায়াবেটিস বা অন্যান্য কারণে অনেকেই মাটির নীচের এই সবজিটির থেকে শতহাত দূরে থাকেন।
কেননা আলুর মধ্যে থাকা হাইপ্রোটিন তথা কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার মাএা বাড়িয়ে তোলে। যদিও ডায়াবেটিস রোগীরাও স্বল্প পরিমাণে আলু খেতেই পারেন এমনটাই জানাচ্ছে সম্প্রতি একটি গবেষণার তথ্য।
ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে গবেষকরা জানাচ্ছেন যে, কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রয়েছে (GI) রয়েছে এমন আলুর ব্যবহার বা খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। এইগুলি রক্তে গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও যারা টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাঁদের প্রায়শই আলু সহ উচ্চ মাত্রার গ্লাইসেমিক রয়েছে এমন সব খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কারন, উচ্চমাত্রার ‘জিআই’ যুক্ত খাবার রাতেরবেলা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যারফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
তবে এই প্রথমবার গবেষকরা দেখিয়েছেন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত একটি ক্লিনিকাল ট্রায়াল। যার মধ্যে টি ২ডি সহ ২৪ জন প্রাপ্তবয়স্কদের সন্ধ্যার খাবারের অংশ হিসাবে খাওয়া খাবার কোনও ব্যক্তির গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণের (জিআর) জন্য জিআই কোনও সঠিক পদ্ধতি নয়। এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককেই একই প্রাতঃরাশ এবং মধ্যাহ্নভোজন দেওয়া হয়েছিল।
তবে তাদের রাতের খাবার দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে সাদা আলু (পরীক্ষার খাবার) যার মধ্যে তিনটি বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুত করা (সিদ্ধ, ভাজা, সিদ্ধ তারপর ঠান্ডা করা হয়) এছাড়াও বাসমতী চালের ভাতের সঙ্গেও আলুর পদ দেওয়া হয়েছিলো। অংশগ্রহণকারীরা প্রতিটি ট্রায়ালের মাঝে নয়দিনের বিরতি নিতেন এবং তারপর ফের আবার একই মেনুর খাবার খেতেন।
আর এই কয়দিন তাঁদের রক্তে শর্করার পরিমাণ মনিটর করা হতো৷ যা থেকে বোঝা যেত আলু টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কতটা হিতকারক।
তবে গবেষকরা বলছেন, পরিমাণ মতো আলু মানব শরীরে কোনও ক্ষতি করে না। বরং আলু না খেলে নানারকম প্রোটিন, ভিটামিন থেকে বঞ্চিত হতে হবে। তাহলে আর কী ভাবছেন চোখ বন্ধ করে আজ থেকেই অল্প অল্প করে শুরু করুন আলু খাওয়া।