ঝাল খেতে যারা ভালোবাসেন, তাদের জন্য সুখবর! অনেকেই মনে করেন বেশি ঝাল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু বিশেষ করে কাঁচা মরিচ খেলে স্বাস্থ্যের অনেক উপকার হয়। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার, থিয়ামিন, রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, ফলেট, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস।
এছাড়াও কাঁচা মরিচে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, বি৬, পটাশিয়াম, কপার ও ম্যাগনেশিয়াম-এর মতো আরও বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান। এই সব উপাদান শরীরের জন্য খুবই উপকারী। চলুন জেনে নিই, কাঁচা মরিচ খেলে আমাদের শরীরে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন আসে:
হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে
কাঁচা মরিচে থাকা বিভিন্ন উপাদান রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থেকেও রক্ষা করে। ফলে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকিও অনেক কমে যায়।
মন ভালো করে
মন খারাপ থাকলে এক টুকরো কাঁচা মরিচ মুখে দিয়ে দেখুন! গরম ভাতের সঙ্গে বা ঝালমুড়িতে একটু বেশি করে কাঁচা মরিচ খেলে মন-মেজাজ একেবারে চাঙ্গা হয়ে যায়। এর কারণ হলো, কাঁচা মরিচ খেলে অ্যান্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্ট্রেস লেভেল তো কমেই, সেই সঙ্গে মন আনন্দে ভরে ওঠে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁচা মরিচে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এটি শরীরে প্রবেশ করলে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যানসার সেল জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি কমে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, প্রস্টেটের যে কোনো রোগ দূরে রাখতে কাঁচা মরিচ বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
সাইনাসের সমস্যা থেকে মুক্তি
শীত এলেই সাইনাসের সমস্যা অনেকের বেড়ে যায়। কাঁচা মরিচে থাকা ক্যাপসিসিন নামক উপাদানের কারণেই এটি ঝাল লাগে। এই উপাদান শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে মিউকাস মেমব্রেনের মধ্যে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে সাইনাস ইনফেকশনের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কাঁচা মরিচ অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কাঁচা মরিচ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ সহজে কাছে ঘেঁষতে পারে না। এর জন্য প্রতিদিন অন্তত দুটি কাঁচা মরিচ খাওয়া ভালো। কাঁচা মরিচে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এই উপাদানগুলো শুধু ইমিউনিটি বাড়ায় না, একই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি ঘটায় এবং ত্বককেও সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে।
সুতরাং, শুধু স্বাদের জন্য নয়, সুস্থ থাকতেও আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় কাঁচা মরিচ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তবে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত, বিশেষত যদি আপনার কোনো পেটের সমস্যা থাকে।
