শরীরের সমস্ত প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা মসৃণ রাখার জন্য পর্যাপ্ত হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেঁচে থাকার জন্য অন্যান্য পুষ্টির মতোই জল অপরিহার্য। একটি সাধারণ পরামর্শ আমরা প্রায়ই শুনে থাকি যে, প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস জল পান করতে হবে। কিন্তু শুধু পর্যাপ্ত জল পান করলেই হবে না। আমরা অনেকেই জল পানের সময় কিছু সাধারণ ভুল করে থাকি যা আমাদের স্বাস্থ্যের সমস্যা তৈরি করতে পারে। আসুন জেনে নিই, জল পানের সময় কোন পাঁচটি ভুল এড়ানো উচিত:
১. দাঁড়িয়ে জল পান করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই দাঁড়িয়ে জল পান করেন। তবে আমাদের নানি-দাদিরা সবসময় মনে করিয়ে দিতেন যে বসে থাকা অবস্থায় জল পান করা উচিত। দাঁড়িয়ে জল পান করলে স্নায়ুতে টান পড়ে, তরলের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং বদহজম হতে পারে। আয়ুর্বেদও দাঁড়িয়ে জল না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। আয়ুর্বেদ অনুসারে, আপনি যখন দাঁড়িয়ে জল পান করেন, তখন তা দ্রুত পেটের নিচের অংশে চলে যায় এবং শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে না।
২. খুব দ্রুত পান করা
এমন অনেক সময় আছে যখন আমরা তাড়াহুড়ো করি বা খুব তৃষ্ণার্ত থাকি বলে খুব দ্রুত জল পান করি। এটি কিডনি এবং মূত্রাশয়ের নিচে জমতে পারে, ফলস্বরূপ দেখা দিতে পারে হজমে সমস্যা। ভালো হজমের জন্য ছোট ছোট চুমুক দিয়ে ধীরে-সুস্থে জল পান করুন।
৩. প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জল পান করা
জল পান করা জরুরি বলে অনেকে আবার প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জল পান করে ফেলেন। কিন্তু অতিরিক্ত জল পানের স্বাস্থ্যগত উপকারের কোনো প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত জল পানের কারণে হাইপোনাট্রেমিয়া হতে পারে, যাকে ‘জলর নেশা’ও বলা হয়। এই অভ্যাস শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা খুব বেশি কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে মস্তিষ্ক ফুলে যায় এবং খিঁচুনিও হতে পারে।
৪. খাবার আগে জল পান করা
অনেক ওজন কমানোর ডায়েটে খাবারের আগে জল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে আপনি কম ক্যালোরি গ্রহণ করেন। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এটি করা ঠিক নয়। তাঁরা বলেন, আমাদের পাকস্থলী ৫০ শতাংশ খাবার, ২৫ শতাংশ জল এবং ২৫ শতাংশ খালি রাখা উচিত। এতে পরিপাক প্রক্রিয়া সহজ থাকে। খাবারের ঠিক আগে জল পান করলে তা আপনাকে পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করতে পারে এবং হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। এটি বমি বমি ভাব এবং কোষ্ঠকাঠিন্যেরও কারণ হতে পারে।
৫. মিষ্টি যোগ করে খাওয়া
কৃত্রিম মিষ্টি ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এগুলো সুস্বাদু হলেও সেইসঙ্গে শরীরকে ডিহাইড্রেটও করতে পারে। নিজেকে হাইড্রেটেড রাখার সর্বোত্তম উপায় হলো শুধু বিশুদ্ধ জল পান করা। কোনো ধরনের কৃত্রিম মিষ্টি বা ফ্লেভার যোগ না করাই ভালো।