যারা মে মাসে জন্মগ্রহণ করেন তাদের বেশিরভাগই নাকি আশাবাদী হন, আর নভেম্বরে জন্মগ্রহণকারীরা নাকি বেশি হতাশায় ভোগেন। সত্যিই কি তাই? মানুষের জন্ম মাসও নাকি তার স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানান দেয়, এমনটিই মত গবেষকদের।
একটি সমীক্ষা বলছে, জন্মের মাস আপনার ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতাকে প্রভাবিত করতে পারে, এমনকি স্বাস্থ্য সম্পর্কেও বিভিন্ন বিষয় জানান দেয়।
১.৭ মিলিয়ন মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্য ও ১,৬৮৮টি অধ্যয়নের মাধ্যমে তা জানা গেছে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক আপনার জন্ম মাস ব্যক্তিত্ব ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে কী বলে?
জানুয়ারি
জানুয়ারি মাসে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের চিকিৎসক, ঋণ সংগ্রহকারী বা ক্রীড়াবিদ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তারা অনেক সৃজনশীল হন। এমনকি জানুয়ারি মাসে জন্মগ্রহণকারীদের বিখ্যাত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
এ মাসে যারা জন্মগ্রহণ করেন তাদের স্বাস্থ্যও অন্যদের চেয়ে ভালো থাকে। তবে এ মাসের জন্মগ্রহণকারীদের কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে পারে।
এছঅড়া সিজোফ্রেনিয়া ও বাইপোলার ডিসঅর্ডারসহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যা জানুয়ারিতে জন্মগ্রহণকারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে এদের মধ্যে খিটখিটে মেজাজের প্রবণতা কম।
ফেব্রুয়ারি
ফেব্রুয়ারিতে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা ব্যক্তি এমনকি কর্মজীবনে বেশি সুখী হন। তবে এ মাসে যারা জন্মগ্রহণ করেন তাদের বেশিরভাগই প্রিম্যাচিউর শিশু হন। যিা শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই মাসে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা উচ্চতায় খাটো হতে পারেন। জানুয়ারির মতো ফেব্রুয়ারিও সৃজনশীলতার মাস। এ মাসে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা শিল্পী বা বিখ্যাত ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারেন।
স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এরা সামগ্রিক রোগ থেকে অনেকটা সুরক্ষিত থাকেন। তবে স্নায়বিকের পাশাপাশি শ্বাসযন্ত্র ও প্রজনন রোগের ঝুঁকি এদের মধ্যে দেখা দিতে পারে।
মার্চ
মার্চ মাসে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিরা জীবনের সব ক্ষেত্রেই সফলতার আশা করেন। তারা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখেন জীবনের সব ক্ষেত্রেই। তারা মন ও মেজাজ সব সময় ভালো রাখার চেষ্টা করেন।
যা তাদের চারিত্রিক অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তবে মার্চে জন্মগ্রহণকারীদের মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বেশি।
এপ্রিল
মার্চ মাসে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় আরও সহনশীল ও ইতিবাচক মনোভাব রাখেন এপ্রিলে জন্মগ্রহণকারীরা। এরা কর্মজীবনে বিভিন্ন পেশা বেছে নেওয়ার সুযোগ পান।
আর স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে এদেরও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বেশি। তবে এপ্রিলে জন্মগ্রহণকারীদের মধ্যে মানসিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কম।
মে
আপনি যদি মে মাসে জন্মগ্রহণ করেন তবে নিজেকে সবচেয়ে ভাগ্যবান বলে মনে করতে পারেন। ক্যারিয়ারের দৃষ্টিকোণ থেকে এদের পছন্দ অন্যদের চেয়ে ভিন্ন। নানা সৃষ্টিশীল কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন তারা।
মে মাসে জন্মগ্রহণকারীদের সাধারণত উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম। তবে গবেষণার তথ্য অনুসারে, তারা আশাবাদী হওয়া সত্ত্বেও হতাশায় ভোগেন বেশি।
জুন
মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে জন্মগ্রহণকারীদের মধ্যে ইতিবাচক গুণ আছে। ঠিক তেমনই জুনের মানুষদের মধ্যেও তা দেখা যায়। তবে তারা দ্রুত মেজাজ হারান আবার তা ঠিকও করেন মুহূর্তেই। অর্থাৎ শর্ট টেম্পার হন জুন মাসে জন্মানো মানুষেরা।
স্কুল পালানো স্বভাব এদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। আবার একাডেমিক সাফল্য অর্জনেও তারা বেশ পারদর্শী। তবে শ্বাসযন্ত্র ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বেশি এদের।
জুলাই
সমীক্ষা অনুসারে, জুলাই মাসে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিরা মানসিকভাবে শক্ত প্রকৃতির হন। তারা নিজের আবেগ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বেশিরভাগ জুলাইয়ে জন্মগ্রহণকারীদের মধ্যেই শৈল্পিক দিক থাকে। এদের বেশিরভাগিই হন বাম-হাতি। তবে এদের প্রজনন স্বাস্থ্যে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আগস্ট
আগস্টে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা পড়ালেখা ও জ্ঞানের দিক দিয়ে অন্যদের চেয়ে বেশ এগিয়ে। তারাও জীবনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখেন। তবে আগস্টে জন্মগ্রহণকারীদের মধ্যে মেজাজের পরিবর্তন বা বাইপোলার ডিজঅর্ডার বেশি দেখা দেয়।
সেপ্টেম্বর
শরৎকালে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিরা বেশি বিষণ্নতায় ভোগেন। তবে তারা কোনো পরিস্থিতিতেই হার মানেন না। নিজেকে প্রমাণ করতে তারা অনেক পরিশ্রম করেন। তারা খেলাধুলায় ভালো করেন। তবে এদের মধ্যে হাঁপানির ঝুঁকি বেশি।
অক্টোবর
সেপ্টেম্বরের মতো অক্টোবরে জন্মগ্রহণকারীরা খেলাধুলায় দুর্দান্ত প্রকৃতির হন। এদের উচ্চতাও অনেক বেশি হয়। তবে কার্ডিওভাসকুলার রোগের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেশি।
নভেম্বর
নভেম্বর মাসে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিরা কম বিষণ্নতায় ভোগেন। তারা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকেন। তবে কোনো কারণে লক্ষ্য অর্জন না হলো তারা অধিক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। যা খারাপ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
এই মাসে জন্মানো ব্যক্তিদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। আবার মানসিক বিভিন্ন সমস্যাতেও এরা বেশি ভোগেন।
ডিসেম্বর
ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিদের কিছু ইউনিক বৈশিষ্ট আছে। বিশেষ করে ডিসেম্বরের ২৪-২৫ তারিখে জন্মগ্রহষ করা ব্যক্তিরা শান্ত মেজাজের হন। তারা সহজে কোনো কিছুতে বিরক্ত হন না বরং সব পরিস্থিতিতেই নিজেকে মানিয়ে রাখার ধৈর্য থাকে তাদের মধ্যে।
তবে ডিসেম্বরে জন্মানো ব্যক্তিদের প্রজনন ব্যবস্থায় ঝুঁকি হতে পারে। একটি সমীক্ষা অনুসারে, ডিসেম্বরে জন্মানো ব্যক্তিদের শত বছর আয়ু পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।