এখন নারীরা শুধুই সংসারেই অর্থসাহায্য করেন না, পাশাপাশি সামলান সংসারের অন্য সব দায়িত্বও। সন্তানের মা হলে তার প্রতি দায়িত্ব তো আছেই। দিন-রাত ব্যস্ত শিডিউলে কাজ করতে নারীকে। এত কিছুর মধ্যে নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখছেন তো?
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজের শরীরের প্রতি গাফিলতিতে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে পারে। হাজার কাজের মধ্যেও শরীরের ঠিকঠাক যত্ন নিতে পারলে চল্লিশ কেন ষাটেও যৌবন ধরে রাখা সম্ভব। কয়েকটা খাবারের ডায়েট মেনে চললেও ত্বক ও শরীরে সতেজতা ধরে রাখা যায়। দেখে নিন কোন কোন খাবার শরীরের ভেতর থেকে বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ব্লুবেরি
প্রতিদিনই কাজের সূত্রে আপনাকে রোদে বেরোতে হয়। এই রোদ আর পলিউশন ত্বকে যে শুধু দাগ ফেলে তা নয়, বরং ত্বকের কোষের ক্ষতিও করে। এ ছাড়া কাজের চাপ তো রয়েছেই। কাজের চাপ থেকে শরীরে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে ফ্রি রেডিক্যালস (radicals), যা বলিরেখা থেকে শুরু করে বার্ধক্যের অন্য সব নমুনাই ত্বকে ফুটিয়ে তোলে। ব্লুবেরিতে রয়েছে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে শরীর থেকে দূর করে। রোদ ও স্ট্রেসের কারণে ক্ষতি হওয়া কোষগুলোকে সারিয়ে তোলে। এ ছাড়া ব্লুবেরিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি। ভিটামিন সি ত্বকের রিঙ্কলসকে দূরে রাখে।
বেদানা
শরীরে উৎপন্ন ফ্রি রেডিক্যালস ঠিক কী করে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্বকে কোলাজেন নামে একটি পদার্থ থাকে যা ত্বককে টানটান রাখে। এ কারণেই ত্বককে যৌবনের মতো সুন্দর দেখায়। ফ্রি রেডিক্যালস ত্বকের এই কোলাজেনকে নষ্ট করে দেয়। ফলে ত্বকে রিঙ্কলস, ফাইনলাইনস ইত্যাদি দেখা দেয়। বেদানা তাই শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বেদানার রস শরীরে ফ্রি রেডিক্যালগুলোকে নষ্ট করে দেয়। শুধু তা-ই নয়, কোলাজেনকেও নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
মাশরুম
শুধু কি ত্বক, বয়স চল্লিশের কোঠায় পড়লেই কোমর ব্যথা, হাড়ের জয়েন্টের ব্যথায় জেরবার হয়ে যায় শরীর। অথচ সংসারের দায়িত্ব তো আর এড়ানো যায় না। কাজের চাপে শারীরিক স্ট্রেসের কারণে শরীর আরো ভেঙে পড়ে। শিরদাঁড়াতে ব্যথা শুরু হয়, হাঁটুতে জল জমে। কেন চল্লিশ এলেই এসব রোগের উপক্রম হয়? ডাক্তাররা বলছেন, ক্যালসিয়ামের অভাব হাড়ের দুর্বলতার একটি মূল কারণ। আর হাড়ের দুর্বলতা থেকেই এসব রোগের উপক্রম। মাশরুম ভিটামিন ডি-র সম্ভার। ভিটামিন ডি ছাড়া হাড় ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে না। তাই শরীরে ভিটামিন ডি-র পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে মাশরুম খেতে পারেন।
বাদাম
শুধু ক্যালসিয়াম নয়, চল্লিশের কোঠা পেরোলে প্রোটিন, ফাইবার ও মাইক্রোনিউট্র্যান্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণগুলোর ঘাটতিও যথেষ্ট দেখা যায়। এরই সঙ্গে শরীরে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরলের পরিমাণ, যা ডেকে আনে হার্টের বিপদ। বাদামের মধ্যে আখরোট আর আমন্ড কোলেস্টেরল কমানোর জন্য সবচেয়ে উপকারী। একই সঙ্গে শরীরে ঘাটতি হওয়া প্রোটিন ফাইবার ও অন্যান্য উপকরণও সরবরাহ করে এই বাদামগুলো।
আনারস
ত্বকের মধ্যে থাকা কোলাজেন পদার্থটি তৈরি হতে লাগে কয়েকটি অ্যামিনো অ্যাসিড। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চল্লিশের পর থেকে শরীরে এই অ্যামিনো অ্যাসিডের মাত্রা কমে যেতে থাকে। ফলে তৈরি হতে পারে না পর্যাপ্ত কোলাজেন। আনারস রয়েছে ম্যাঙ্গানিজের মতো ধাতু, যা এই অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরিতে প্রধান ভূমিকা রাখে। তাই ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে আনারসের মতো ফলকে ডায়েট থেকে বাদ রাখলে চলবে না।