গরমে প্রাণ জুড়াতে এক গ্লাস আখের রস: উপকারিতা জানলে অবাক হবেন!

গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর জল বেরিয়ে যায়, ফলে শরীরে দেখা দেয় জলের ঘাটতি। এই সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা অত্যন্ত জরুরি। তবে শুধুমাত্র জল নয়, আরও অনেক পানীয়ই শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। তার মধ্যে অন্যতম হলো আখের রস। গরমের দুপুরে এক গ্লাস ঠাণ্ডা আখের রস যেমন প্রাণ জুড়িয়ে দেয়, তেমনই এর পুষ্টিগুণ আপনাকে অবাক করবে। আখের রসে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীর থেকে দূষিত পদার্থ নির্মূল করে শরীরকে ভিতর থেকে ঝরঝরে করে তোলে।

স্বাদের পাশাপাশি আখের রস পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এই গরমে আখের রস পানে আরও যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়, দেখে নিন:

শক্তি বৃদ্ধি করে
গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যায়, যার ফলে ক্লান্তি অনুভব হয়। আখের রসে থাকা কার্বোহাইড্রেট দ্রুত শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে নিমিষেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।

প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায়
নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রজনন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আখের রস বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এটি প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।

লিভার ও কিডনির যত্নে
লিভারকে সুস্থ রাখতে ও তার কার্যক্ষমতা বাড়াতে আখের রস অত্যন্ত উপকারী। জন্ডিসের রোগীদের জন্য এটি একটি প্রচলিত পথ্য হিসেবে বিবেচিত। এছাড়াও, প্রস্রাবের সংক্রমণ-জনিত সমস্যায় ভুগলেও আখের রস খেলে উপকার পেতে পারেন, কারণ এটি প্রস্রাবের প্রবাহকে সচল রাখতে সাহায্য করে।

ত্বক ও চুলের যত্নে
আখের রস শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, ত্বক ও চুল ভালো রাখার ক্ষেত্রেও দারুণ কার্যকর। এতে থাকা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (AHA) ত্বককে সতেজ রাখতে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাথার খুশকির সমস্যা কমাতেও আখের রসের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে
আখের রসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। ফাইবার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আখের রসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গ্রীষ্মকালে আখের রস পান করলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
আখের রস মিষ্টি হওয়ায় অনেকেই ডায়াবেটিসের ভয়ে এটি এড়িয়ে চলেন। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আখের মধ্যে আইসোম্যাল্টোজ নামক একটি উপাদান রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে কমে গেলে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) আখের রস খেলে উপকার পেতে পারেন। তবে কী পরিমাণে আখের রস খাবেন, তা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy