ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে আমরা কত কিছুই না ব্যবহার করি। দামি ক্রিম থেকে শুরু করে কত রকমের সিরাম! তবে মনে রাখবেন, কেবল বাহ্যিক পরিচর্যাই যথেষ্ট নয়। সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে সঠিক খাদ্যাভ্যাসও জরুরি। আর এক্ষেত্রে আপনার সঙ্গী হতে পারে একটি বিদেশি ফল – ড্রাগন ফল।
একসময় বিদেশি ফল হিসেবে গণ্য হলেও, ড্রাগন ফল এখন আমাদের দেশেও বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। এর শুধু স্বাদই চমৎকার নয়, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও বহু উপকারী। ত্বককে উজ্জ্বল রাখা থেকে শুরু করে ওজন কমাতেও এই ফল অত্যন্ত কার্যকরী। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও তেমনই সুস্বাদু এই ফলটির আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকায়। তবে বর্তমানে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড এবং চীনেও এর চাষ হয়ে থাকে।
যারা ব্রণ নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন কিংবা ত্বকের ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলেছেন, তাদের জন্য ড্রাগন ফল হতে পারে এক দারুণ সমাধান। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সহায়ক। শুধু তাই নয়, এই ফলের রস ত্বকে লাগিয়ে স্ক্রাব করলেও আপনি উপকার পাবেন।
রোদে পোড়া ত্বকের যত্নেও ড্রাগন ফল একটি চমৎকার প্রাকৃতিক উপাদান। এক্ষেত্রে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সঙ্গে এক চতুর্থাংশ ড্রাগন ফল মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন, দেখবেন ত্বক কতটা সতেজ লাগছে।
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও ড্রাগন ফলের উপর আস্থা রাখতে পারেন। কারণ এই ফলের প্রায় ৮০ শতাংশই জল। শুষ্ক ত্বকের জন্য এটি খুবই উপকারী। এছাড়া, অকালে ত্বক কুঁচকে যাওয়া রোধ করতেও এই ফল সহায়ক। এক টেবিল চামচ ড্রাগন ফলের সাথে এক টেবিল চামচ দই মিশিয়ে নিন। ফলটি ভালোভাবে ম্যাশ করে মিশ্রণটি মুখে লাগান। চোখের নিচের অংশে পুরু করে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন, এরপর ধুয়ে ফেলুন।
শুধু ত্বক নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও ড্রাগন ফল অপরিহার্য। এটি ভিটামিন সি-তে ভরপুর, যা এই সময়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই ফল আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও, ড্রাগন ফল শরীরে শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধিতেও সহায়ক। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্যও এটি একটি ভালো বিকল্প, কারণ এর সিংহভাগই জল। এটি প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হজমক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
তাই, বয়স ধরে রাখার পাশাপাশি সুস্থ জীবনযাপন করতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ড্রাগন ফল যোগ করুন। সুন্দর ত্বক ও সুস্থ শরীর – দুটোই পাবেন এই একটি ফলের মাধ্যমেই।