‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ এখন মাছ খাওয়া কমিয়ে দিয়ে মাংসের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। এই অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য খারাব। কেননা মাছ শরীরের যে উপকার করে তা মাংস থেকে পাওয়া যায় না। মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ প্রোটিন, নামমাত্র ক্যালোরি, খনিজ আর ৯টি অ্যামাইনো অ্যাসিড। এই উপাদানগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও ক্যান্সারের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
চিকিৎসকরাও মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাদের মতে মাছ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই যারা নিয়মিত মাছ খান তারা রোগ ব্যাধিতে কম ভোগেন। মাছে যে উপাদান রয়েছে তা হার্ট ভালো রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
এবার জেনে নিন মাছ খেলে কী কী উপকার পাওয়া যায়…
প্রাণিজ প্রোটিনের মতো মাছে থাকা ফ্যাট ক্ষতিকারক নয়। মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিজ যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। মাছে থাকা ট্রাইগ্লিসারিড রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বাড়তে দেয় না।
মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ডি যা দাঁত, হাড় মজবুত করে, একই সঙ্গে কমায় টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। মাছে থাকা একাধিক খনিজ উপাদান ও ভিটামিন কোলন, ব্রেস্ট বা প্রসেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। অ্যালজাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো স্নায়ুরোগের ঝুঁকিও অনেকটাই কমে নিয়মিত মাছ খেলে।
মাছে থাকা ভিটামিন বি-২ শিশুর স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাছ বাচ্চাদের বুদ্ধি বাড়ায়। গবেষকরা মতে, শিশুদের নিয়মিত মাছ খাওয়ালে তাদের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ঘুমের মাত্রা ঠিক থাকে। শুধু ঘুমের সময় নয়, ভালো ঘুমের জন্যও উপকারী মাছ।
মাছে থাকা আয়রন রক্তাল্পতার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করতেও সাহায্য করে। এতে থাকা জিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এনজাইম ভেঙে শরীরে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে জিঙ্ক। ফলে সুস্থ ভাবে ক্রিয়াশীল থাকে অন্ত্র।
মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম যা ক্যালসিয়াম, যা হজম করতে সাহায্য করে। এতে হাড় ও দাঁত তার প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন-সি সহজেই পেয়ে যায়। মাছে থাকা ম্যাগনেশিয়াম হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে।
তাই শরীরের সার্বিক সুস্থতা ধরে রাখতে, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক বা ক্যান্সারের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যাকে দূরে সরিয়ে রাখতে নিয়মিত মাছ খাওয়া জরুরি।bs