সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। কেউ আবার চোট পেলে উষ্ণ গরম দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খান। তবে জানেন কি, হলুদ নিজেই সুপারফুড, আর এর সঙ্গে গোলমরিচ মেশালে এর কার্যকারিতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়?
হলুদ ও গোলমরিচ কেন একসঙ্গে উপকারী?
হলুদে রয়েছে:
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস
প্রদাহনাশক (Anti-inflammatory)
অ্যান্টি-সেপ্টিক ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান
গোলমরিচে রয়েছে:
ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ
উচ্চমাত্রার ফাইবার
অল্প পরিমাণ প্রোটিন ও শর্করা
পাইপারিন (Piperine) নামক উপাদান, যা হলুদের কারকিউমিনের শোষণ ক্ষমতা ২০০০ গুণ বাড়িয়ে দেয়।
আমাদের শরীর হলুদের থাকা কারকিউমিন সম্পূর্ণভাবে শোষণ করতে পারে না। বেশিরভাগ কারকিউমিন লিভার ও অন্ত্রে দ্রুত বিপাক হয়ে যায়। কিন্তু গোলমরিচ যোগ করলে কারকিউমিনের শোষণ ক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায় এবং শরীরে আরও কার্যকর হয়।
হলুদ ও গোলমরিচ একসঙ্গে খেলে কী কী উপকারিতা পাবেন?
১. ব্যথা-বেদনা দূর করতে জাদুকরী সমাধান
আগেকার দিনে ঠাকুমারা চোট লাগলে হলুদ লাগাতে বলতেন—কারণ হলুদ স্বাভাবিকভাবে প্রদাহ কমায়।
গোলমরিচ যুক্ত হলে ব্যথা দ্রুত কমে এবং নার্ভ সংক্রান্ত যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি মেলে।
২. আর্থারাইটিস ও জয়েন্টের ব্যথা কমায়
আয়ুর্বেদ অনুসারে, হলুদ আর্থারাইটিসের ব্যথা কমায়।
রান্নায় নিয়মিত হলুদ ও গোলমরিচ ব্যবহার করলে গাঁটের ব্যথা থেকে উপশম পাওয়া যায়।
৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ডায়াবেটিস শিরা-উপশিরার ক্ষতি করে, যা রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
হলুদ ও গোলমরিচের কারকিউমিন ও পাইপারিন একসঙ্গে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে ও শিরা-উপশিরার উপর চাপ কমায়।
৪. ওজন কমাতে কার্যকরী
হলুদ ও গোলমরিচ শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
বিপাক হার বাড়াতে প্রতিদিন সকালে গরম জলে হলুদ, গোলমরিচ ও আদা মিশিয়ে পান করুন।
৫. ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক
গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদের কারকিউমিন ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
বিশেষত স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে হলুদ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
সম্ভবত এই কারণেই পশ্চিমা দেশের তুলনায় ভারতে ক্যানসারের প্রকোপ কম।
কীভাবে খাবেন?
রোজ সকালে খালি পেটে: ১ গ্লাস উষ্ণ গরম জলে ১ চিমটি হলুদ + ১ চিমটি গোলমরিচ মিশিয়ে পান করুন।
রান্নায় নিয়মিত ব্যবহার করুন হলুদ ও গোলমরিচ—শরীর থাকবে সুস্থ ও রোগমুক্ত!
শুধু হলুদ নয়, গোলমরিচের সঙ্গেই হলুদের আসল শক্তি প্রকাশ পায়!