সারাক্ষণ কানের মধ্যে গান বাজে আর আপনি তার মধ্যে দিয়েই নিজের দৈনিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন? হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে তার ফলে মন-মেজাজ ভালো থাকে, জীবন অনেকটাই সহনশীল হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই সঙ্গে কানে সারাক্ষণ ইয়ারফোন গুঁজে রাখার কতগুলো বিপদের দিকও আছে, সেটা কখনও ভেবে দেখেছেন?
ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজ়েশনের সাম্প্রতিক সমীক্ষা জানাচ্ছে যে অন্তত 10 লক্ষ তরুণ-তরুণীর শ্রবণযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে দিনভর কানে ইয়ারফোন গুঁজে বা হেডফোন লাগিয়ে রাখার ফলে। আশপাশের সমস্ত শব্দ, বিরক্তিকর সহকর্মীদের আলাপচারিতা ইত্যাদি ঢেকে ফেলার জন্য এঁরা সাধারণত কানে সারাদিন হেডফোন গুঁজে রাখেন এবং চড়া স্বরে গান শোনেন। দিনে 90 মিনিটের বেশি কানের মধ্যে চড়া শব্দতরঙ্গ খেলে বেড়ালেই শ্রবণশক্তি হারানোর আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। বলা হচ্ছে, 2050-এর মধ্যে এর আসল ছবিটা খুব স্পষ্টভাবে চোখে পড়বে।
রাস্তাঘাটে বিপদ হতে পারে: স্রেফ শ্রবণশক্তি হারানোটাই কিন্তু একমাত্র শঙ্কা নয়, নয়েজ় ক্যানসেলিং ইয়ারফোন বা হেডফোন লাগিয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার অভ্যেসটাও মারাত্মক। গাড়িঘোড়ার আওয়াজ শুনতে না পেয়ে সাঙ্ঘাতিক দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই।
হেডফোন শেয়ার করলে বাড়ে কানে ইনফেকশনের আশঙ্কা: বন্ধুবান্ধব বা প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে হেডফোন বা ইয়ারফোন শেয়ার করাটাই দস্তুর। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন, তার ফলে নানা ইনফেকশন হতে পারে কানে? আপনি কি অন্য কারও ইয়ারবাড ব্যবহার করবেন কানের ময়লা পরিষ্কারের জন্য? উত্তর যদি না হয়, তা হলে ইয়ারফোনও ব্যবহার করা উচিত নয়।
প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর হেডফোন খুলে রাখুন কান থেকে: কাজ বা বিনোদন, যে কোনও কারণেই হোক না কেন, সারাদিন হেডফোন পরে থাকবেন না। প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর তা খুলে রাখুন, কানকে বিরতি দিন। যদি দেখেন যে এত লম্বা সময় কানের মধ্যে তা গুঁজে রাখার কারণে কান ভোঁ-ভোঁ করছে, তা হলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের দ্বারস্থ হোন। শ্রবণশক্তি হারানোর প্রথম লক্ষণ এটাই।
লম্বা সফরে বা কাজের সময় গানের দ্বারস্থ না হওয়াই ভালো: পড়াশোনা বা কাজকর্ম করার সময় গান শোনার অভ্যেস থাকলে তা বদলান, এতে নিশ্চিতভাবেই আপনার ফোকাস নড়ে যাওয়ার কথা। যে কাজটা করছেন, তাতে মন দিন। লম্বা সফরে কানে দীর্ঘক্ষণ ইয়ারফোন গুঁজে রাখলে বা বই পড়লে আপনার ভার্টিগোর সমস্যা হতে পারে। তাই যাত্রাপথের সৌন্দর্য উপভোগে মন দিন।