ভাত খাওয়ার নাম শুনলেই বুকের ভিতরটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে আপনার? যাঁরা স্বাস্থ্য সচেতন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান বা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁরা তো পারলে ভাতের চেয়ে শত হস্ত দূরে থাকেন! কিন্তু ইদানীংকালে পুষ্টিবিদরা বলছেন, যেহেতু এশিয়ার বাসিন্দারা হাজার হাজার বছর ধরে ভাত খেতে অভ্যস্ত, তাই তা থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে থাকাটাও বোকামি। বিশেষ করে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ভাত খেলে হার্টের রোগ আর ক্যানসার ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব বলেও প্রমাণিত হয়েছে কিছু কিছু সমীক্ষায়। পুষ্টিবিদরা বলেন, কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়ে গেলে কিছু সমস্যা হয়। আর ধবধবে সাদা চালের দেখতে সুন্দর ভাতে পুষ্টিগুণের কিছুই প্রায় অবশিষ্ট থাকে না অতিরিক্ত পালিশ করার ফলে। কিন্তু ঢেঁকি ছাঁটা লাল চাল বা কালো চালের ভাত খেতে তো ভালোই, নানা পুষ্টিগুণেও তা সমৃদ্ধ। কালো চালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডান্ট থাকে, তাই ইদানীং তা নিয়ে পুষ্টিবিদরাও উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছেন।
চিন, জাপান, উত্তর-পূর্ব ভারতে বহু বছর ধরেই কালো চালের চাষ হয়। সাদার চেয়ে কালো চালে ক্যালোরির পরিমাণ কম, উলটে পাওয়া যায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। ফ্ল্যাভোনয়েড ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের কারণে নানা রোগের সঙ্গে যোঝার ক্ষমতা তৈরি হয় শরীরের, মস্তিষ্ক সুস্থভাবে কাজ করতে পারে। এর মধ্যে ফাইবারের পরিমাণও সাদা, লাল বা ব্রাউন রাইসের তুলনায় অনেকটাই বেশি। কালো চালের অ্যান্থোসায়ানিন যে কোনও ফ্রি রাডিক্যালের মারণ বাড়বৃদ্ধি রুখতে সক্ষম। শরীরে কোনও প্রদাহ থাকলে তা-ও কমিয়ে দেয়। সুস্থ রাখে হৃদয় আর লিভার, কমায় অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা। এটি গ্লুটেন-মুক্ত ও হজম সংক্রান্ত গোলমালে যাঁরা ভুগছেন, তাঁরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।
বিশেষ টিপস:
কালো চালের ভাত রান্না হতে একটু বেশি সময় লাগে, তাই আগের রাত থেকে ভিজিয়ে রাখুন।
রান্না হতে মোটামুটি আধ ঘণ্টা মতো সময় লাগে এবং রান্নার পর গাঢ় বেগুনি বর্ণ ধারণ করে কিছু প্রজাতির কালো চাল। কিছু কালো চাল দিয়ে পায়েসও রান্না করা যায়, চমৎকার বেগুনি বর্ণ ধারণ করে সেই পায়েস।
যতটা চাল, তার দ্বিগুণ জল দিতে হয় সাধারণত। তবে যাঁরা ফ্যান বাদ দিয়ে ভাত খেতে অভ্যস্ত, তাঁরা আরও একটু বেশি জল দিতে পারেন।