বাঙালির পাতের সবচেয়ে পরিচিত মাছ হলো রুই। শুধু স্বাদে অতুলনীয় বলেই নয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও রুই মাছের জুড়ি মেলা ভার। আপনি কি জানেন, অতি পরিচিত এই মাছটি আসলে পুষ্টির এক গোপন খনি? আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ও পুষ্টিবিদরা রুই মাছকে হৃদযন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্রের পরম বন্ধু হিসেবে দেখছেন।
কেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রুই মাছ রাখা জরুরি? এর বিস্ময়কর উপকারিতাগুলো জেনে নিন:
১. হার্ট থাকবে চনমনে, কমবে কোলেস্টেরল
রুই মাছের তেলে রয়েছে ওমেগা থ্রি নামক অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি রক্তের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল (LDL ও VLDL) কমিয়ে দেয় এবং উপকারী কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়। ফলে হৃদযন্ত্রের ধমনীতে চর্বি জমতে পারে না, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কয়েক গুণ কমিয়ে দেয়।
২. স্ট্রোক ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি থেকে মুক্তি
আমেরিকার ‘স্কুল অব নিউট্রিশন’-এর জার্নাল অনুযায়ী, এই মাছ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সরাসরি সাহায্য করে। ওমেগা থ্রি রক্তের অণুচক্রিকাকে জমাট বাঁধতে দেয় না, ফলে রক্তনালিতে ব্লকেজ তৈরি হওয়ার ভয় থাকে না। গবেষকদের মতে, নিয়মিত রুই মাছ খেলে স্ট্রোকের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
৩. মেদ কমাতে দুর্দান্ত কার্যকর
যারা অতিরিক্ত ওজন বা মেদ নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য রুই মাছ এক আদর্শ খাবার। এতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম এবং প্রোটিনের মান অত্যন্ত উন্নত। পেশি গঠনে সাহায্য করার পাশাপাশি এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।
৪. নতুন আবিষ্কৃত পুষ্টি উপাদান ‘কোলিন’
রুই মাছে রয়েছে ‘কোলিন’ নামক একটি বিশেষ পদার্থ, যা আধুনিক বিজ্ঞানে এক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি হিসেবে স্বীকৃত। এটি শরীরের ডিএনএ সংশ্লেষে সাহায্য করে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সচল রাখে। এছাড়া ফ্যাটের বিপাক ক্রিয়া ও পরিবহনে এটি দারুণ ভূমিকা পালন করে।
৫. ভিটামিন ও খনিজের পাওয়ার হাউস
ভিটামিন: গাজরের মতো এই মাছেও রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই।
খনিজ: এতে ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও আয়রন প্রচুর পরিমাণে থাকে।
কতটুকু খাবেন?
পুষ্টিবিদদের মতে, যেকোনো ভালো জিনিসেরই ভারসাম্য থাকা জরুরি। একজন সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন রুই মাছের একটি বড় টুকরোই যথেষ্ট। এটি আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও ওমেগা থ্রি-র জোগান দিতে সক্ষম।