বর্ষাকালের একটা প্রধান সমস্যা হল সারাদিন ভিজে-ভিজে, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া৷ সেই সঙ্গে বিচ্ছিরি একটা গরমও পড়ে মাঝেমধ্যে৷ আমার-আপনার কাছে এই পরিস্থিতি যতটাই বিরক্তিকর হোক না কেন, ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুরা পরম আনন্দে বংশবিস্তার করে এই ঋতুতে৷ তাই যে সব ফল-সবজি বা শাকপাতা থাকে আপনার রোজের খাদ্যতালিকায়, সেগুলি সম্পর্কেও বিশেষ যত্নশীল হওয়া দরকার৷ সমস্ত শাকসবজি ভালো করে ধুয়ে তার পর খান৷ সম্ভব হলে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট আর জল দিয়ে হালকা গোলাপি রঙের একটি মিশ্রণ তৈরি করে তার মধ্যে শাকসবজি অন্তত 10 মিনিট ভিজিয়ে রেখে ভালো করে ধুয়ে নিন৷
অনেকেই খোসাসমেত শসা আর টোম্যাটো ব্যবহার করেন স্যালাডে, এই ঋতুর পক্ষে সেটাও খুব একটা অনুকূল নয়৷ সম্ভব হলে বাদ দিন লেটুস বা অন্য কাঁচা খাওয়ার উপযোগী শাকপাতা৷ এমনকী অঙ্কুরিত ছোলা-মুগও কাঁচা না খেয়ে সামান্য ভাপিয়ে নিয়ে তবেই খাওয়া ভালো৷ রান্না করা খাবার হজম হয় তাড়াতাড়ি৷ যে কোনও সবুজ শাক থেকে এই একটা সময় দূরে থাকতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়৷ তার বদলে খাদ্যতালিকায় রাখুন লাউ, ঝিঙে, চিচিঙ্গে, পটলের মতো অন্যান্য মরশুমি আনাজ৷ যে কোনও খাবারই ভালো করে রান্না করার পর খাবার পরামর্শ একটাই কারণে দেওয়া হয় – তাতে মরে যায় সব জীবাণু৷ ফলে ডায়রিয়া, ফুড পয়জ়নিং ইত্যাদি সমস্যাও স্পর্শ করতে পারে না৷ বিকেলের দিকে মোমো, ভেলপুরি বা ফুচকার মতো মুখরোচক কিছু একটা না খেলে থাকতে পারেন না? এই ঘোর বর্ষার দিনগুলোয় রসনা সন্তুষ্ট রাখুন খুব ভালো করে সেঁকার পর ঝাল নুন-লেবুর রস মাখিয়ে নেওয়া ভুট্টার সাহায্যে৷
যে যে খাবারগুলি খাদ্যতালিকায় রাখা আবশ্যক:
আদা: আদার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল গুণের কারণেই বহু যুগ ধরে সর্দি-কাশি সারানোর কাজে তার ব্যবহার হয়৷ সকালের চায়ে এক স্লাইস আদা ফেলে দিন, তা সেবন করুন সামান্য মধু সহযোগে, আচমকা ঠান্ডা লেগে যে সব সমস্যা হয়, তা সেরে যাবে৷
কাঁচা হলুদ: খুব ভালো করে ধুয়ে আধ ইঞ্চিমাপের কাঁচা হলুদ থেঁতো করে নিন৷ তার পর সেটা দুধে দিয়ে ফুটিয়ে নিন ভালো করে৷ দুধটা ছেঁকে সামান্য মধু দিয়ে পান করুন৷ হলুদের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ সব ইনফেকশন থেকে আপনাকে দূরে রাখবে৷
সিট্রাস ফল: আনারস, পাতিলেবু, পেয়ারা, পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে৷ বর্ষার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি জোগায় ভিটামিন সি৷
গ্রিন টি ও তুলসী: গ্রিন টি-র প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বাড়ায় আপনার প্রতিরোধক্ষমতা৷ ঠান্ডা লাগলে বা সর্দি কাশি হলে ভালো কাজে দেয় আদা-তুলসীপাতা দেওয়া চায়েও৷