নিজের বুদ্ধি বাড়াতে চান? মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে চান? তাহলে কিছু জিনিষ আছে যা পালন করলে আপনি উপকৃত হতে পারেন। এক সময় শরীরের নানাবিধ সমস্যার চিকিৎসায় আয়ুর্বেদিক মেডিসিনকে কাজে লাগানো হত। আজ যদি আধুনিক চিকিৎসার দাপাদাপিতে এই সুপ্রাচীন চিকিৎসা বিদ্য়াটি কিছুটা হলেও পিছনের সারিতে চলে গেছে। কিন্তু এর কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা বেজায় বোকামি হবে। তাই তো আজ এই প্রবন্ধে এমন কিছু প্রকৃতিক উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যাদেরকে কাজে লাগিয়ে ব্রেন সেলের জন্মহার বাড়িয়ে তোলা সম্ভব। আর একবার এমনটা হলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ব্রেন সেলের কর্মক্ষমতাও বাড়ে চোখে পরার মতো। ফলে ব্রেন সেল ড্য়ামেজ হয়ে গিয়ে মস্তিষ্ক সম্পর্কিত নানাবিধ জটিল রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা কমে। আর শরীরের কমান্ড সিস্টেম বা কন্ট্রোল প্যানেল যখন চাঙ্গা হয়ে ওঠে, তখন সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতাও যে বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! তাই তো বন্ধু, সুস্থভাবে বাঁচতে মস্তিষ্কের খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে আপনার রান্না ঘরে জায়গা করে নেওয়া অতি সাধারণ কিছু মশলা এবং গাছ-গাছালি। যেমন ধরুন…
১. তুলসি: একেবারেই ঠিক শুনেছেন! মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে বাস্তবিকই তুলসির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে তুলসি পাতা খাওয়া মাত্র মস্তিষ্কের অন্দরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কগনিটিভ ফাংশনের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের পরিবারে অ্যালঝাইমার্সের মতো ব্রেন ডিজিজের ইতিহাস রয়েছে, তারা নিয়মিত তুলসি পাতার রস খেতে ভুলবেন না যেন!
২. অশ্বগন্ধা: ব্রেন ফাংশনকে বাড়াতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। আসলে অশ্বগন্ধার শরীরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান ব্রেন সেলের কর্মক্ষমতাকে ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্মৃতিশক্তি যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি বুদ্ধির ধারও বাড়ে চোখে পরার মতো। শুধু তাই নয়, মস্তিষ্ক সম্পর্কিত নানাবিধ জটিল রোগের প্রকোপ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. জায়ফল: বিরিয়ানিতে ব্যবহৃত এই মশলাটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। এমনকী একাদিক স্টাডিতে এও দেখা গেছে যে ব্রন সেলগুলিকে সুস্থ রাখতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. বুদ্ধি ও স্মৃতি শক্তি বাড়াতে খান এই সব খাবার !: এই মশলাটি এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দারুন কাজে আসে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতারও বৃদ্ধি ঘটায়।
৫. গোল মরিচ: শরীরকে রোগমুক্ত রাখার পাশপাশি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতেও এই মশলাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো আজ থেকেই গোলমরিচ কেন্দ্রিক নতুন নতুন রেসিপি শিখে বানাতে শুরু করে দিন। দেখবেন অল্প দিনেই ফল পেতে শুরু করে দেবেন।
৬. রোজমেরি: সেই সুপ্রাচীন কাল থেকে নানা ধরনের রোগ সারাতে আয়ুর্বেদিক ঔষুধিতে এই হার্বটির ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যরক্ষা করে, ফলে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে বাড়ে ব্রেন পাওয়ারও।
৭. লবঙ্গ: স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে এটি দারুন কাজে আসে। শুধু তাই নয় সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটিয়ে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, মানসিক চাপ যত বাড়ে, তত মস্তিষ্কের অন্দরে আঘাতের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে, ফলে কমে ব্রেনের কাজ করার ক্ষমতা। তাই এই বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখাটাও জরুরি।
৮. দারুচিনি: শরীরকে নানাভাবে সুস্থ রাখতে এই মশলাটির কোনও বিকল্প আছে বলে তো মনে হয় না। শুধু তাই নয় মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতেও দারুচিনি দারুন কাজে আসে। কাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন এই মশলাটি খেলে নানা রকমের জটিল নিউরোলজিকাল সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে কমে যায়। সেই সঙ্গে নার্ভাস সিস্টেমকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করে ব্রেন পাওয়ারেরও বৃদ্ধি ঘটায়।
৯. ক্যামোমিল: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ব্রেনকে উদ্দিপিত করে তার কর্মক্ষমতা বাড়াতে এটি দারুন কাজে দেয়। তাই যদি প্রতিদিন কয়েক কাপ ক্য়ামোমিল টি খাওয়া যায়, তাহলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল হতে শুরু করে। ফলে মনোযোগ যেমন বাড়ে, তেমনি বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে।
১০. থাইম গুল্ম: এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি মনোযোগ বাড়াতেও সাহায্য করে। তবে প্রতিদিন খেতে হবে এই ঔষধি গুল্মটি, তবেই কিন্তু ভাল ফল পাবেন।
১১. মিন্ট পাতা: মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তুলতে এই হার্বটি কার্যকরী ভূমিকা নেয়। প্রতিদিন এক কাপ করে পিপামেন্ট চা খান। তাহলেই দেখবেন শরীরে বয়সের ছাপ পড়লেও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতায় কোনও দিন কোনও পরিবর্তনই আসবে না।