দ্রুত ওজন কমাতে, কিটো ডায়েট কতটা নিরাপদ জানুন

বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়েছে, তবে অনেকেই দ্রুত ওজন কমানোর জন্য ভুল পথ বেছে নিচ্ছেন। অনেকে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর না দিয়ে কেবল দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কঠোর বিধিনিষেধযুক্ত ডায়েট অনুসরণ করছেন। এরকমই একটি জনপ্রিয় কিন্তু বিপজ্জনক খাদ্যাভ্যাস হলো কিটো ডায়েট।

কিটো ডায়েট কী?
“কিটো” শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ “কিটোল” থেকে। কিটোজেনিক ডায়েট মূলত এপিলেপসি (মৃগীরোগ) আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এতে কম শর্করা, বেশি চর্বি এবং মাঝারি পরিমাণ প্রোটিন থাকে। এই ডায়েট শরীরকে কিটোসিস অবস্থায় নিয়ে যায়, যেখানে শরীর কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে চর্বি থেকে শক্তি উৎপাদন করে।

কিটো ডায়েটের মাধ্যমে কিছু মানুষের ওজন কমতে দেখা গেলেও এটি মোটেই স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি নয়। ওজন কমানোর জন্য এটি গ্রহণ করা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও আলঝাইমারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

কিটো ডায়েট কতটা বিপজ্জনক?
ওয়াশিংটনের ‘Physicians Committee for Responsible Medicine’-এর নিউট্রিশন এডুকেশন ম্যানেজার ও পুষ্টিবিদ লি ক্রসবি ‘ফ্রন্টিয়ারস অফ নিউট্রিশন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, কিটো ডায়েট অন্তত সাতটি প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অথচ অনেকেই এই খাদ্যাভ্যাসকে স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন।

কিটো ডায়েটের কিছু নেতিবাচক প্রভাব:
✅ হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি: কিটো ডায়েটের কারণে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়।
✅ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: দীর্ঘদিন কিটো ডায়েট অনুসরণ করলে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হতে পারে।
✅ বৃক্কের (কিডনি) ক্ষতি: যাদের কিডনি দুর্বল, তাদের জন্য কিটো ডায়েট মারাত্মক হতে পারে, এমনকি কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যেতে পারে।
✅ গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিপজ্জনক: গর্ভবতী নারীরা কিটো ডায়েট অনুসরণ করলে নবজাতকের মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।

ওজন কমানোর স্বাস্থ্যকর উপায় কী?
❌ কিটো ডায়েটের মতো কঠোর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ না করে সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা সবচেয়ে ভালো উপায়।

✅ দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের হিসাব রাখুন।
✅ পর্যাপ্ত শাক-সবজি, ফলমূল, পরিপূর্ণ শস্য ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খান।
✅ নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন।
✅ অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।

সতর্কতা:
⚠ কোনো বিশেষ খাদ্যাভ্যাস গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
⚠ অল্প সময়ে ওজন কমানোর চেষ্টা না করে ধীরে ধীরে ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন।

💡 সুস্থভাবে ওজন কমান, দীর্ঘমেয়াদে ভালো থাকুন! 😊

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy