বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অতিরিক্ত ওজন শরীরের নানা রোগের কারণ। তাই নিজেকে ফিট রাখতে অনেকেই কঠোর ডায়েট ও শরীরচর্চার দিকে ঝুঁকছেন। ওজন কমানোর পাশাপাশি শরীরচর্চা জয়েন্টের ব্যথা কমাতেও দারুণ কার্যকর।
অনেকেই ওজন কমাতে জিমে ভর্তি হচ্ছেন। তবে সবার বাড়িতে সরঞ্জাম কেনার সামর্থ্য বা জায়গা থাকে না। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ট্রেইনারের পরামর্শে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যায়াম করা বুদ্ধিমানের কাজ।
কিন্তু জিমে গিয়ে অতি উৎসাহে অনেকেই কিছু ভুল করে ফেলেন। ওজন কমানোর জন্য মন দিয়ে ডায়েট ও শরীরচর্চা করা জরুরি, তবে শুরু থেকেই অতিরিক্ত ওজন তোলা, খুব বেশি ডাম্বেল এক্সারসাইজ করা অথবা প্রায় কিছুই না খেয়ে থাকা একদমই উচিত নয়। প্রতিদিন কতটা ক্যালোরি ঝরাচ্ছেন তার হিসাব রাখার পাশাপাশি ডায়েট চার্টে ভারসাম্য বজায় রাখাও জরুরি।
যে বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখবেন:
১. অবশ্যই ট্রেনারের পরামর্শ নিন:
জিমে প্রথম দিন গিয়েই কোনো ভারী ওয়েট তুলবেন না। এতে পেশির ক্ষতি হতে পারে এবং পেশির গঠনও সঠিকভাবে হয় না। শুরুতে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ ও স্ট্রেচিংয়ের উপর বেশি জোর দিন। ওয়েট লিফটিংয়ের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। প্রথম দিন বেশি ওজন তুললে পেশিতে টান লাগতে পারে এবং সেখান থেকে স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
২. প্রতিদিন কতখানি ক্যালোরি বার্ন হচ্ছে হিসাব রাখুন:
একদিনেই আপনার ওজন কমে যাবে না। তাই একটি বাস্তবসম্মত টার্গেট সেট করে সেই অনুযায়ী অভ্যাস করুন। প্রথম সপ্তাহেই ২০ কেজি ওজন তোলার চেষ্টা করবেন না। বরং বিভিন্ন ব্যায়ামের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ান। প্রথম দুদিন দুই সেট করে ব্যায়াম করলে, পরের দিন তিন সেট করে অভ্যাস করুন। এভাবে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হলে আপনি ২৫ কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে পারবেন।
৩. ডায়েট চাট মেনে চলুন:
প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের মধ্যে সঠিক অনুপাত থাকা প্রয়োজন। শুধু প্রোটিন যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনই শুধু সেদ্ধ সবজি বা ফল শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব ঘটাতে পারে। তাই খাবারের মধ্যে ভারসাম্য রাখুন। এছাড়াও, একই ডায়েট দীর্ঘ দিন অনুসরণ করা উচিত নয়। প্রতি আড়াই মাস অন্তর ডায়েট পরিবর্তন করুন।
৪. ধৈর্য ধরুন এবং নিয়মিত জিম করুন:
অনেকেই মনে করেন জিমে ভর্তি হলেই ওজন কমে যাবে। তবে বিষয়টা এমন নয়। ধৈর্য ধরে নিয়ম মেনে জিম করতে হবে। ওজন কমানোর এই যাত্রা দীর্ঘ সময়ের। প্রত্যেকের বডি টাইপ ও ওজনের উপর নির্ভর করে অন্তত তিন মাস সময় দিতেই হবে। একটানা তিন মাস সঠিক ডায়েট ও শরীরচর্চা করলে ওজন যেমন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে, তেমনই শরীর টোনড হবে।
ওজন কমানোর জন্য তাড়াহুড়ো না করে সঠিক নিয়ম মেনে চলুন এবং ধৈর্য ধরুন। ট্রেইনারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করুন এবং একটি সুষম ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন। তাহলেই আপনি কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন।