আমাদের শরীর গঠনে নানা খনিজের নানা গুণ রয়েছে। কোনও একটির ঘাটতিতে দেখা যেতে পারে মারাত্মক সব রোগ। যেমন পটাশিয়ামের কথাই ধরুন না। এই খনিজটির ঘাটতি দেখা দিলে আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজে বাঁধা আসতে শুরু করে। তাই তো চিকিৎসকেরা পটাশিয়ামকে, শরীরের সবথেকে প্রয়োজনিয় খনিজগুলির তালিকায় একেবারে উপরের দিকে রাখেন। কী কাজে লাগে পটাশিয়াম? পেশিগুলি যাতে ঠিক মতো কাজ করতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে। সেই সঙ্গে হার্ট এবং কিডনিকে সুস্থ রাখে। শরীরে জলের মাত্রা টিক রাখতেও পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রসঙ্গত, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বেশিরভাগ মানুষের শরীরেই এই খনিজটির ঘাটতি দেখা যায়। আর সব থেকে ভয়ঙ্কর বিষয় হল, শরীরে পটাসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে সাধারণত কোনও লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে না। ফলে বেশিরভাগ মানুষ বুঝতেই পারেন না যে তাদের শরীর ভেতর থেকে ক্ষয় হতে শুরু করেছে। তাই তো এই প্রবন্ধে পটাসিয়ামের ঘাটতি ঘটলে সাধারণত যে যে লক্ষণগুলির বহিঃপ্রকাশ ঘটে, সেগুলির প্রসঙ্গে আলোচনা করা হল।
১. ক্লান্তি বোধ বেড়ে যায়: সব সময়ই কি ক্লান্ত লাগে? তাহলে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ শরীরে পটাসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে প্রথমেই কিন্তু ক্লান্ত লাগার মতো লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এক্ষেত্রে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।
২. আপনার খাবারের প্লেট কি রং-বেরঙের হয় না: চিকিৎসকেরা সব সময় উপদেশ দেন বেশি করে ফল আর শাকসবজি খাওয়ার। সেই সঙ্গে প্রোটিন, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারও যেন প্লেটে জায়গা করে নেয়। তাই তো বলে আপনার খাবার প্লেট যত রং-বেরঙের হবে, তত পটাশিয়ামের ঘটতি ঘটার আশঙ্কা কমবে।
৩. উচ্চ রক্তচাপ: একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিক হয়েছে যে আপনার শরীরে পটাসিয়ামের ঘাটতি দেখা গেলে রক্ত চাপ বাড়তে শুরু করে। আসলে নুন জাতীয় খাবার বেশি খেলে, আর সবজি কম খেলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
৪. বারং-বার পেশিতে টান ধরলে: হঠাৎ করে পেশিতে টান ধরার ঘটনা বারে বারে হলে বুঝবেন শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এমন সমস্যা অ্যাথেলিটদের বেশি হয়। কারণ অতিরিক্ত শরীরচর্চার কারণে তাদের ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বেরিয়ে যায়। ফলে ক্র্যাম্প ধরার মতো ঘটান ঘটে।
৫. বুক ধরফর করে? শরীরে পটাসিয়ামের মাত্রা কমে গেলে বুক ধরফর করার মতো লক্ষণের বিহঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। সেই সঙ্গে অনিয়মিত হৃদ স্পন্দনের মতো সমস্যাও দেখা দেয়। পটাশিয়াম লেভেল স্বাভাবিক করার উপায় কী? প্রচুর পরিমাণে ফল এবং শাক-সবজি খেতে হবে। খোসা সমেত সেদ্ধ আলু খেলেও ভাল ফল পাবেন। প্রসঙ্গত, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারগুলি হল পালং শাক, স্ট্রবেরি, অ্যাভোকাডো, ব্রকলি প্রভৃতি।