নিয়ম মেনে ডায়েটিং করছেন, ব্যায়ামেও কোনও ঘাটতি নেই, কিন্তু তা সত্ত্বেও ওজন কিছুতেই কমছে না? এই পরিস্থিতিতে প্রথমেই খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে আপনার কোনও শারীরিক সমস্যা আছে কিনা৷ যাঁদের পলি সিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের মতো সমস্যা থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে কিন্তু ওজন কমানোটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়৷ নানা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতে প্রতি পাঁচজন মহিলার মধ্যে একজন এই সমস্যায় ভোগেন এবং ক্রমশ এটি বন্ধ্যাত্বের অন্যতম প্রধান কারণে পরিণত হচ্ছে৷ অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যহানি হওয়ার পাশাপাশি পিসিওএসের কারণে ওজন বাড়ে৷ আবার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে এই রোগ সারার নামও নেয় না৷
কী করে বুঝবেন যে আপনার পিসিওএস আছে?
অনিয়মিত ঋতুচক্র: কারও কারও ক্ষেত্রে এক মাসে একাধিকবার ঋতুস্রাব হতে আরম্ভ করে, কেউ মাসের পর মাস ঋতুমতী হন না৷ অতিরিক্ত স্রাব বা মাসিকচক্রের সময়ে যন্ত্রণাদায়ক ক্র্যাম্পও হয়৷
ত্বকের তেলাভাব ও ব্রণ বেড়ে যাওয়া: তৈলাক্ত ত্বক পিসিওএসের অন্যতম লক্ষণ৷ বয়ঃসন্ধির পর সাধারণত ব্রণর সমস্যা আর তেমন বিব্রত করার কথা নয়৷ পরিণত বয়সেও যাঁরা অতিরিক্ত ব্রণর সমস্যায় ভুগছেন এবং কোনও পরিচিত ওষুধেই তেমন কাজ হচ্ছে না, তাঁরা সতর্ক হোন৷
ওভারিতে সিস্ট: সাধারণত এক বা একাধিক সিস্ট থাকে ওভারিতে৷ সোনোগ্রাফি করলে তবেই তা ধরা পড়ে৷
ত্বকের রোমশভাব বেড়ে যাওয়া: মুখ, পেট, বুক বা থাইয়ের উপর দিক আচমকাই অত্যন্ত রোমশ হয়ে পড়ছে? ঘন ঘন ওয়্যাক্সিং বা থ্রেডিং না করে একবার আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করুন৷
ওবেসিটি: যে সব মহিলা পিসিওএসে ভোগেন, তাঁদের মধ্যে আশি শতাংশই ওবেসিটিও আক্রান্ত৷
সমস্যা যতই হোক না কেন, ওজন কমানোর চেষ্টাটা আপনাকে চালিয়ে যেতেই হবে৷ একবার ওজন কমতে আরম্ভ করলেই ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসবে হরমোনের সমস্যা, কমবে পিসিওএস৷ খুব ভালো হয় আপনার পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াদাওয়া করতে পারলে৷ সেই সঙ্গে মেনে চলুন নিচের নিয়মগুলি:
প্রতিদিন অন্তত 30-45 মিনিট পা চালিয়ে হাঁটুন৷ ধীরে ধীরে হাঁটাটাকে জগিংয়ে পরিণত করতে হবে৷ প্রতি দু’ সপ্তাহ অন্তর ব্যায়ামের সময় বা ইন্টেনসিটি বাড়াতে হবে৷
প্রসেসড খাবার ও জাঙ্ক ফুডের থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন নিজেকে৷ বাড়িতে রান্না করে খান, ময়দা আর মিষ্টিও চলবে না৷ স্ন্যাক্স হিসেবে বেছে নিন ছানা, বাদাম বা ফলের মতো বিকল্পগুলিকে৷
রাতের খাওয়া সেরে ফেলুন ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত দু’ ঘণ্টা আগে৷ আর সারা দিনে প্রতি দু’ ঘণ্টা অন্তর অন্তর কিছু না কিছু খেতে হবে৷ সেই সঙ্গে বাড়ান জল খাওয়ার পরিমাণ, দিনে অন্তত 5 লিটার জল খেতে পারেন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ৷