উজ্জ্বল, মসৃণ, দাগহীন ত্বক কে না চায় বলুন! আর এর জন্য চাই ত্বকের নিয়মিত সঠিক পরিচর্যা। কিন্তু বাড়ির কাজ, অফিসের কাজের চাপ, এই সবের মাঝে আলাদা করে সময় পাওয়া যায় না ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য।
ফলে মুখে ব্রণ-ব়্যাশ কালচে দাগ-ছোপ দেখা দেয়। সানবার্ন, হরমোনের পরিবর্তন, ব্রণ-ব়্যাশ, ক্ষত থেকে তৈরি দাগ এবং কোনও ওষুধ বা স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মতো বিভিন্ন কারণে ত্বকে কালো দাগ-ছোপ দেখা দিতে পারে। ত্বকে ডার্ক স্পট যেকোনও বয়সেই হতে পারে। এর ফলে মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়।
তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতির সাহায্যে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক, মুখের কালচে দাগ দূর করতে কোন কোন ঘরোয়া প্রতিকার বেশি কার্যকর –
>পটাসিয়াম, ভিটামিন বি৬, জিঙ্ক, ফসফরাস এবং ভিটামিন সি-এর মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরপুর আলু। মুখের কালো দাগ দূর করতে দুর্দান্ত কার্যকর আলু।
এক্ষেত্রে, আলু স্লাইস করে কেটে জলে ভিজিয়ে সরাসরি আক্রান্ত স্থানের উপর ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। এছাড়া, আলু গ্রেট করে ১ চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে ডার্ক স্পটের জায়গায় লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
>বাটারমিল্কও মুখের কালো দাগ-ছোপ দূর করতে দুর্দান্ত কার্যকর। একটি ছোটো পাত্রে ৪ চা চামচ বাটারমিল্ক এবং ২ চা চামচ টমেটো রস মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন।
তারপর জল দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। এছাড়াও, একটি কটন প্যাড বাটারমিল্কে ভাল করে ভিজিয়ে আপনার পুরো মুখে বা কালো ছোপের জায়গায় আলতো করে ঘষে নিন। ২০ মিনিট রেখে দিন। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
দই, দুধ এবং বাটারমিল্কে উচ্চ পরিমাণে ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকায় এটি মুখের কালো দাগ হালকা করার জন্য একটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার।
>লেবুর রস ত্বকের দাগকে হালকা করতে সহায়তা করে। একটি তুলার বলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস নিয়ে ডার্ক স্পটের জায়গায় কিছুক্ষণ ঘষে নিন। ত্বকের বর্ণের ভারসাম্যতা বজায় রাখতে, লেবুর সাথে এক চা চামচ দই কিংবা তেল মিশিয়েও ব্যবহার করা যেতে পারে।
>আধা কাপ ওটস গুঁড়া এবং ১-২ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর ওই পেস্টটি দিয়ে আপনার ত্বকে স্ক্রাব করুন। ১৫ মিনিট রেখে দিন এবং পরে কুসুম গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ভালো ফল পেতে, সপ্তাহে ১-২ দিন এটি করতে পারেন। এছাড়াও, তিন টেবিল চামচ ওটমিলের সাথে এক টেবিল চামচ মধু এবং দুধ মেশাতে হবে। আক্রান্ত স্থানে পেস্টটি লাগান এবং এটি সম্পূর্ণরূপে শুকানো পর্যন্ত রেখে দিন।
তারপর হালকা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ওটমিল ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে, মধু এবং দুধ ময়শ্চারাইজ করতে ও কালো দাগগুলিকে হালকা করতে সাহায্য করে।
>কাঁচা দুধ ত্বকের পিগমেন্টেশন কমাতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে দুর্দান্ত কার্যকর। একটি তুলার বল দুধে ভিজিয়ে ১০ মিনিট ত্বকে হালকাভাবে লেপন করুন। টানা চার সপ্তাহ দিনে দু’বার করে এই প্রতিকারটি করুন, আর দেখুন ম্যাজিক! আরও দ্রুত ফল পেতে, দুধের সাথে মধু মিশিয়েও ব্যবহার করা যেতে পারে।
>ত্বকের ফোলাভাব, লালচেভাব নিরাময় এবং কালচে দাগ দূর করতে অ্যালোভেরা দুর্দান্ত কার্যকর। সামান্য একটু অ্যালোভেরার জুস কিংবা জেল হাতে নিয়ে, আক্রান্ত স্থানে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন।
কিছুক্ষণ রাখার পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে দুইবার করতে হবে। এছাড়াও, তাজা অ্যালোভেরা জেলের সাথে গ্রেট করা শসা, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়া মিশিয়ে নিন। এই পেস্টটি আক্রান্ত স্থানে লাগান এবং পুরোপুরি শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে, ঠাণ্ডা জল দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন।
>মুখের কালচে দাগ দূর করতে হলুদ গুঁড়া দুর্দান্ত কার্যকর। একটি পাত্রে ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ১-২ চা চামচ দুধ এবং ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করে নিন।
তারপর, ওই পেস্টটি মুখে ভাল করে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ার সাথে ১-২ চা চামচ মধু ও ১ চা চামচ তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর একই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।